নদী-নালা ও খাল-বিল থেকে জাগ দেওয়া পাট তুলে সোনালি আঁশ ছাড়ানো ও রোদে শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মানিকগঞ্জ জেলার চাষিরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় দেশি, তোষা, মেস্তা ও কেনাফ প্রজাতির পাট চাষ হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে পাটের চাষ হয়েছিল ৩,৭৩৫ হেক্টর জমিতে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে চাষ হয়েছিল ৩,৯৭৩ হেক্টর জমিতে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চাষ হয়েছিল ৪,৬৫৬ হেক্টর জমিতে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চাষ হয়েছিল ৪,২৯৫ হেক্টর জমিতে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪,২৯৫ হেক্টর।
সরেজমিনে জানা যায়, পাট থেকে সোনালি আঁশ ছাড়াতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা। তাদের সঙ্গে পরিবারের নারী সদস্যরাও সহযোগিতা করছেন। সদর উপজেলার নবগ্রাম এলাকার রাস্তার পাশের খালে পাট জাগ দিয়ে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে পাট তুলে রাস্তার পাশে বসে আঁশ ছাড়ানোর কাজ করছেন তারা।
নবগ্রাম এলাকার পাট চাষি মতিন শেখ বলেন, ‘ক্ষেত থেকে পাট কেটে মাথায় করে এনে রাস্তার পাশের খালে জাগ দিয়েছিলাম। এখন জাগ আসায় আঁশ ছাড়াতে হচ্ছে। তারপর রোদে ভালো করে শুকিয়ে ঘরে তুলতে পারবো। জাগ বেশি হয়ে গেলে রং নষ্ট হয়ে যাবে। এ কারণে তাড়াতাড়ি আঁশ ছাড়াতে হয়।’
আরও পড়ুন
একই এলাকার পাট চাষি হানিফ হাওলাদার বলেন, ‘এখন আমরা যে পাট নিচ্ছি; এগুলোকে বাছনা পাট বলে। ক্ষেতের ছোট পাটগুলোকে আমরা বাছনা পাট বলি। বড় পাট কাটবো আরও কয়েকদিন পর। পাট ঘরে তুলতে অনেক কষ্ট হয়। দক্ষ লোক পাওয়া যায় না। নানান ঝামেলা পাট চাষে।’
সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের কামতা এলাকার পাট চাষি মান্নান বলেন, ‘আমরা ক্ষেত থেকে পাট কেটে এনে গাজিখালি নদীতে পাট জাগ দিই। এ বছর আমি তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। আমার প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। এই পাট নেওয়ার জন্য ভালো লোক পাওয়া যায় না। অন্য জেলায় মানুষ আমাদের মতো পাট নিতে পারেন না।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. রবীআহ নূর আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলার কৃষকেরা প্রায় ৪,২০০ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। পাট পরিপক্ব হওয়ায় পুরোদমে আঁশ ছাড়িয়ে শুকিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে। এ বছর পাটের দাম ভালো। আশা করছি কৃষকেরা উৎপাদন খরচ তুলেও কিছুটা লাভের মুখ দেখবেন। এ বছর কৃষক লাভবান হলে আগামীবার চাষ আরও বাড়বে।’
এসইউ/এমএস