ভারত মহাসাগরে চীনের আধিপত্য রুখতে প্রস্তুতি নিচ্ছে দিল্লি
নিজের ঘরের কোণেই ভারত মহাসাগর। কিন্তু সেখানে আধিপত্য চীন। তাই উপায়ন্তর না দেখে এবার চীনের বিরুদ্ধে নিজেকে প্রস্তুত করছে ভারত। সে লক্ষ্যে ভারত দেশটির নৌবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করেছে। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বৃহ’ এই দুই দেশের শত্রুতা এখন নতুন মোড় নিয়েছে। সামরিক শক্তিধর চীনকে মোকাবিলায় তাই ভারত সাগরে নামিয়েছে সাবমেরিন, ডেস্ট্রয়ার ও ফ্রিগেট।
আরব সাগরের তীরবর্তী শহর মুম্বাইয়ে বুধবার একটি কমিশনিং অনুষ্ঠানে যোগ দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জলযানগুলো দেশীয়ভাবে তৈরি করা হয়েছে। মোদি বলেন, তার দেশ বিশ্বের বড় মেরিটাইম শক্তি হয়ে উঠছে। দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে কৌশলগত প্রভাব বিস্তারে তার দেশ ক্রমাগতভাবে চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বলেও জানান মোদি। ভারত নিজের নৌবাহিনীকে এই শতাব্দীর জন্য প্রস্তুত করছে বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, আগে আটলান্টিক মহাসাগরের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ নিয়ে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হতো। তবে এখন সেই জায়গাটা দখল করেছে ভারত মহাসাগর। আর তাই এই অঞ্চল এখন আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। ক্রমবর্ধমান সেই প্রতিযোগিতার মধ্যে ভারতও তাদের প্রতিরক্ষা খাতকে ঢেলে সাজাতে চাইছে। বিশেষ করে সোভিয়েত যুগের অস্ত্রপাতি থেকে সরে আসছে চায় দিল্লি।
গেল বছর দেশীয়ভাবে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি করতে রেকর্ড ১৫০০ কোটি ডলার ব্যয় করে ভারত। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, আগের বছরের তুলনায় এটি প্রায় ১৭ শতাংশ ব্যয়বৃদ্ধি। এরই অংশ হিসেবে নিজেদের নৌবাহিনীকে ভারত নতুন প্রযুক্তির সমরাস্ত্র দিচ্ছে। আগামী এক দশকের মধ্যে নিজেদের যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনের সংখ্যা ১৫০ থেকে ১৭০টিতে উন্নীত করতে চায় ভারত।
২০২২ সালে দেশে তৈরি প্রথম এয়ার ক্রাফট ক্যারিয়ার কমিশন করে ভারত। তবে দেশটির এখনো চরম দুর্বলতা রয়ে গেছে। রাশিয়ার ওপর অস্ত্রশস্ত্র কেনার নির্ভরতা কমাতে চাইছেন কিন্তু দেশটি এখনো বিশ্বের অন্যতম বড় অস্ত্র আমদানিকারক। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, স্পেনের সঙ্গে চুক্তিও সই করেছে ভারত। এছাড়া ফ্রান্সের রাফায়েল যুদ্ধবিমান ও স্কোরপেন-ক্লাসের সাবমেরিনও পেতে চান মোদি।