ভাড়া পঞ্চাশ টাকা বেশি চাওয়ায় সিএনজিচালককে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে ফয়সাল নামের এক ছাত্র সমন্বয়ক ও তার সহযোগীরা। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
আহত সিএনজি চালক আলম মিয়া (৩৫) যাত্রাপুর গ্রামের নসু মিয়ার ছেলে। সমন্বয়ক দাবিকারী সাদভ ইসলাম ফয়সাল একই গ্রামের জাবেদ আলীর ছেলে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মুরাদনগর উপজেলা কমিটির সদস্য তিনি।
জানা যায়, ৮ মার্চ তারাবি নামাজের সময় যাত্রাপুর থেকে কোম্পানিগঞ্জ যাওয়ার জন্য ফয়সাল সিএনজিচালক আলম মিয়ার কাছে সিএনজি ভাড়া জানতে চাইলে তিনি দুশ টাকা ভাড়া বলেন। এ সময় ফয়সাল ভাড়া ৫০ টাকা বেশি কেন জানতে চাইলে আলম বলেন, রাতে কোম্পানীগঞ্জ থেকে যাত্রাপুরের কোনো যাত্রী পাবেন না বলে ভাড়া ৫০ টাকা বেশি লাগবে।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ফয়সাল তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। পরে অন্য সিএনজি ভাড়া নিয়ে চলে যাওয়ার সময় ফয়সাল সিএনজিচালক আলম মিয়াকে মারবে বলে হুমকি দিলে আলম তার প্রতিবাদ করেন। পরে ফয়সাল ও তার সহযোগীরা সিএনজি থেকে নেমে এসে আলম মিয়াকে সিএনজি সমিতির দোকানে ঢুকিয়ে সাটার বন্ধ করে এলোপাতাড়ি মারধর করে।
পরে স্থানীয়রা এসে আহত আলম মিয়াকে উদ্ধার করে মুরাদনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে দুদিন চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার তাকে বাড়িতে নিয়ে এলে পুনরায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এ সময় তাকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আহত আলমের ভাই সুজন বলেন, আমার ভাইয়ের শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ। বাঁচবে কিনা ডাক্তার সঠিক বলতে পারছে না। ভাইয়ের চিকিৎসা করার মতো টাকাও আমাদের কাছে নেই। আমরা হামলাকারী ফয়সালসহ সবার বিচার চাই।
অভিযুক্ত সাদভ ইসলাম ফয়সাল ভাড়া বেশি চাওয়া নিয়ে ঝগড়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তারাও আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমি আলম মিয়াকে হাসপাতালে গিয়ে দেখে আসছি। দশ হাজার টাকাও দিয়ে আসছি। এ সময় তিনি নিজেকে একটি পত্রিকার সাংবাদিক বলে দাবি করেন।
যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য দুলাল মিয়া বলেন, সমন্বয়ক ফয়সাল এলাকায় অনেক প্রভাব বিস্তার করছে। ন্যায়-অন্যায় বিচার না করে সে যা বলে তাই সঠিক প্রচার করে। সেদিন পরিষদে গিয়ে ৫০০ ভিজিএফ কার্ড দাবি করেন। আমি প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে ওসি সাহেবের কাছে বিচার দিয়েছে যে, আমি নাকি তাদের কাজে বাধা দিচ্ছি।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, সমন্বয়কদের সিএনজিচালককে মারধরের বিষয়টি আমি অবগত আছি। সে ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।