জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার সংখ্যার চেয়ে বেশি সংখ্যক ব্যালট পেপার দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের জিএস প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে ১০ নম্বর ছাত্র হলে ভোট দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ অভিযোগ করেন।
মাজহারুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশনের ছোট ছোট ত্রুটিগুলো এখন বড় আকারে প্রভাব ফেলছে। ব্যালট পেপারের ক্ষেত্রে দেখছি যে ভোটকেন্দ্রে ৫২২ জন থাকলে সেখানে ৬০০টি ব্যালট দিয়েছে। কোথাও ৩৯০ জন ভোটার থাকলে সেখানে ৪০০টি দেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছিলাম অতিরিক্ত ব্যালটগুলো সমস্যাজনক ও স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে অন্তরায়, তাই আমরা চেয়েছিলাম অতিরিক্ত ব্যালট যেন না রাখা হয়। কিন্তু আমরা দেখছি প্রতিটি হলেই অতিরিক্ত ব্যালট দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তাদের কাছে কোনো ব্যাখ্যা নেই, নির্দেশনা নেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা খুবই দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের স্বচ্ছতার জন্য যে ভূমিকা রাখার কথা ছিল, এখনো তারা পর্যাপ্ত ভূমিকা রাখতে পারছে না। আমরা আশা করছি, পোলিং এজেন্ট নিয়ে যে সংশয় দেখা দিয়েছে তা দ্রুত দূর করবেন। এবং অতিরিক্ত ব্যালট ভোটকেন্দ্রে রাখার দ্বার কারচুপির শঙ্কাকে উসকে দেওয়াকে কোনোভাবেই সমীচীন মনে করছি না।
এবারের নির্বাচনে মোট ১১ হাজার ৮৯৭ জন শিক্ষার্থী ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে ছাত্র ৬ হাজার ১১৫ জন এবং ছাত্রী ৫ হাজার ৭২৮ জন। ভোটগ্রহণের জন্য ২১টি কেন্দ্রে ২২৪টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে।
ছাত্রদের হলের মধ্যে আল বেরুনী হলে ভোটার ২১০ জন, আ ফ ম কামালউদ্দিন হলে ৩৩৩ জন, মীর মশাররফ হোসেন হলে ৪৬৪ জন, শহীদ সালাম-বরকত হলে ২৯৮ জন, মওলানা ভাসানী হলে ৫১৪ জন, শহীদ রফিক-জব্বার হলে ৬৫০ জন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ৩৫০ জন, ২১ নম্বর ছাত্র হলে ৭৩৫ জন, জাতীয় কবি নজরুল হলে ৯৯২ জন এবং তাজউদ্দীন আহমদ হলে ৯৪৭ জন ভোটার রয়েছেন।
ছাত্রীদের হলের মধ্যে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে ২৭৯ জন, জাহানারা ইমাম হলে ৩৬৭ জন, প্রীতিলতা হলে ৩৯৬ জন, বেগম খালেদা জিয়া হলে ৪০৩ জন, সুফিয়া কামাল হলে ৪৫৬ জন, ১৩ নম্বর ছাত্রী হলে ৫১৯ জন, ১৫ নম্বর ছাত্রী হলে ৫৭১ জন, রোকেয়া হলে ৯৫৬ জন, ফজিলাতুন্নেছা হলে ৭৯৮ জন এবং তারামন বিবি হলে ৯৮৩ জন ভোটার রয়েছেন।
এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫ পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ১৭৭ জন প্রার্থী। নির্বাচনে বামপন্থি, শিবির, ছাত্রদল ও স্বতন্ত্রদের সমর্থিত মিলিয়ে সর্বমোট আটটি প্যানেল অংশগ্রহণ করবে। ছাত্রদের ১১টি ও ছাত্রীদের ১০টি হল মিলিয়ে মোট ২১ ভোটকেন্দ্র ঠিক করা হয়েছে।
ভোটগ্রহণের জন্য ২১টি কেন্দ্রে ২২৪টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। নির্বাচনে ৬৭ জন পোলিং অফিসার (শিক্ষক) এবং ৬৭ জন সহায়ক পোলিং অফিসার (কর্মকর্তা) নিয়োগ করা হয়েছে। ভোটগ্রহণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে ভোট গণনা করা হবে।
নির্বাচন উপলক্ষে ক্যাম্পাসের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ১৫০০ পুলিশ, সাত প্ল্যাটুন বিজিবি ও পাঁচ প্ল্যাটুন আনসার ক্যাম্পাসের পরিসীমায় মোতায়েন থাকবে। এছাড়া ক্যাম্পাসে যে কোনো অপ্রীতিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মোকাবিলায় আনসার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ক্যাম্পাসে ও ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করবেন।
মো. রকিব হাসান প্রান্ত/এমএন/এএসএম