মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে স্বস্তির ঈদযাত্রা

2 days ago 10

পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে ঢাকা ছাড়ছেন ঘরমুখো মানুষ। এ কারণে শনিবার (২৯ মার্চ) সকাল থেকেই রাজধানীর মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে ছিল যাত্রীদের ভিড়। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে টার্মিনালে এই ভিড় আরও বাড়ছে।
 
পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা জানিয়েছেন, সড়কে যানজট না থাকায় ঈদযাত্রায় বাড়তি চাপে সমস্যা হচ্ছে না মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে। অনেকটা স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরছেন যাত্রীরা। শনিবার সন্ধ্যায় এবং রোববার সকালে টার্মিনালে যাত্রীর চাপ আরও কয়েকগুন বাড়বে বলে জানিয়েছেন তারা।
 
মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ রুটে বাস যাত্রী পরিবহন করে। এসব রুটে যাতায়াতের আগাম টিকিট কিনতে হয় না। টার্মিনালে গেলেই টিকিট পাওয়া যায়। আবার কয়েকটি পরিবহনের টিকিটের জন্য খানিকটা সময় লাইনে দাঁড়াতে হলেও টিকিট পাওয়া যায়।

jagonews24.com

শনিবার (২৯ মার্চ) সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মহাখালী টার্মিনালে আসছেন ঘরমুখো মানুষ। তারা নিজ নিজ গন্তব্যের বাস কাউন্টারের সামনে গিয়ে নির্দিষ্ট মূল্যে টিকিট কাটছেন। তবে কয়েকটি পরিবহনকে নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে ভাড়া কিছুটা বেশি নিতে দেখা গেছে। এ অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের তেমন আপত্তি বা তর্ক করতে দেখা যায়নি।
 
চালক এবং যাত্রীরা জানান, ঈদ মৌসুমে এই সড়কগুলোতে শুধু যাওয়ার যাত্রী পাওয়া যায়। ফেরার সময় যাত্রী পাওয়া যায় না। তাই সবসময়ই ঈদযাত্রায় গন্তব্য অনুযায়ী ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি ভাড়া নেওয়া হয়। এ নিয়ে কারো তেমন আপত্তি থাকে না।

মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ রুটে সবচেয়ে বেশি যাত্রী যাতায়াত করেন। এই রুটে সবচেয়ে বেশি যাত্রী পরিবহন করে ইউনাইটেড ট্রান্সপোর্ট। ৫ আগস্টে সরকার পতনের আগে এই রুটে এককভাবে যাত্রী পরিবহন করতো এনা ট্রান্সপোর্ট। এখন এনার সেই কাউন্টারেই টিকিট বিক্রি করছে ইউনাইটেড। এই পরিবহনের বাসে বাড়তি ভাড়া আদায়ের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

ময়মনসিংহ সদরে যাওয়ার জন্য ইউনাইটেড ট্রান্সপোর্টের টিকিট কাটেন যাত্রী জামাল উদ্দিন। আলাপকালে তিনি বলেন, স্বাভাবিক সময়ের মতোই কাউন্টারে গিয়ে টিকিট কেটেছি। তবে অন্য সময়ের চেয়ে এখন যাত্রীর চাপ কিছুটা বেশি। ঈদযাত্রায় তেমন কোনো ভোগান্তি দেখছি না।

তবে ইউনাইটেড ট্রান্সপোর্টের এসি বাসের স্বল্পতার কারণে অনেক যাত্রীকে দীর্ঘ সময় কাউন্টারে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। বিকেল তিনটার দিকে রুহুল আমিন নামে এক যাত্রী জানান, ঘণ্টা খানেক আগে তিনি বাসের টিকেট কেটেছেন। তবে সে বাস এখনো কাউন্টারে আসেনি। বাসটি আসতে আরও আধা ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইউনাইটেড ট্রান্সপোর্টের স্বত্বাধিকারী ও ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, শনিবার ভোর থেকে তাদের কাউন্টারে টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীও বেড়েছে। পর্যাপ্ত যাত্রী হলেই আমাদের বাস টার্মিনাল ছেড়ে যাচ্ছে। রাস্তায় যানজট না থাকায় যাত্রীরা স্বস্তিতে যাতায়াত করতে পারছেন। তবে এসি বাস কম থাকায় যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ সংকট সমাধান করা হবে।

ঢাকা-হালুয়াঘাট-ঢাকা রুটে নিয়মিত যাত্রী পরিবহন করে শ্যামলী বাংলা। সরেজমিনে দেখা যায়, মহাখালী বাস টার্মিনালের দক্ষিণ পাশে বাসের সামনে চেয়ার টেবিল পেতে টিকিট বিক্রি করছেন কাওসার আলম। স্বাভাবিক সময়ে এই গন্তব্যের ভাড়া ৪৮৭ টাকা। কিন্তু এখন ঈদের মৌসুম দেখে এই গন্তব্যে তারা ৫৫০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছেন।

বেশি ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কাওসার আলম বলেন, এখন ঈদ মৌসুম দেখে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে যাত্রীদের তেমন আপত্তি নেই। কারণ যাত্রী নিয়ে হালুয়াঘাট গেলেও ঢাকা ফেরার সময় আবার বাস ফাঁকা থাকে। তাই হালুয়াঘাটে যাত্রী নামিয়ে বাস দ্রুত সময়ে ঢাকায় চলে আসে।

হালুয়াঘাট যাওয়ার উদ্দেশ্যে শ্যামলী বাংলা পরিবহনের টিকিট কাটেন যাত্রী কামরান। তিনি বলেন, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় তার কাছ থেকে ৭০ টাকা বেশি ভাড়া রাখা হয়েছে। এ নিয়ে তেমন আপত্তি নেই। ঈদ মৌসুমে নিরাপদে যাতায়াতই মুখ্য।

টাঙ্গাইলে যাত্রী পরিবহন করে বিনিময় ও সৌখিন নামে দুটি কোম্পানির বাস। তাদেরও প্রতিটি টিকিটে প্রায় ১০০ টাকা করে বাড়তি ভাড়া আদায় করতে দেখা যায়।

এমএমএ/এএমএ

Read Entire Article