মহানবীর (সা.) কবরকে কবর বলা কি নিষিদ্ধ?

3 hours ago 5

আমাদের দেশে অনেকের ধারণা হলো, মহানবী (সা.) ও পীর-দরবেশদের কবরকে কবর বলা যাবে না, রওজা বা মাজারই বলতে হবে, কবর বললে তাদের সঙ্গে বেয়াদবি হবে—এই ধারণা সঠিক নয়। নবী (সা.) বা বুজুর্গদের করবকে কবর বলা যাবে না এমন কোনো নিষেধাজ্ঞা ইসলামে নেই।

হাদিসে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ নবী-রাসুলগণের কবরকেও কবরই বলা হয়েছে। সহিহ বুখারিতে বর্ণিত হাদিসে নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ইহুদী ও নাসারাদের উপর আল্লাহর লানত, কারণ তারা তাদের নবীদের কবরগুলোকে সিজদার স্থান বানিয়েছে। (সহিহ বুখারি: ৪৩৫) অন্য এক হাদিসে নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার নিজের কবরকেও কবর বলেন। নবীজি (সা.) বলেন, আমার কবরকে আপনারা উৎসবের স্থান বানাবেন না। (সুনানে আবু দাউদ: ২০৪২)

এই হাদিসগুলো থেকে বোঝা যায় নবীগণসহ সম্মানিত ব্যক্তিদের কবরকে কবর বলা নিন্দনীয় নয়, বেয়াদবি নয়। সাহাবায়ে কেরামও নবীজির (সা.) কবরকে ব্যাপকভাবে কবরই বলতেন।

মহানবীর (সা.) কবরকে রওজা ও মাজার বলা যাবে?

রওজা শব্দের অর্থ বাগান। মহানবীর (সা.) কবরকে রওজাও বলা যায়। এ ছাড়া সাহাবায়ে কেরাম, পীর-দরবেশসহ যে কোনো নেককার মুমিন ব্যক্তির কবরকে রওজা বলা জায়েজ।

নবীজি (সা.) বলেছেন, কবর জান্নাতের বাগানসমূহের মধ্যে একটি বাগান অথবা জাহান্নামের গর্তসমূহের মধ্যে একটি গর্ত। (সুনানে তিরমিজি: ২৪৬০)

মহানবী (সা.) যেহেতু জান্নাতি, অন্য নেককার মুমিনদের ব্যাপারেও আশা করা যায় তারা জান্নাতি হবেন, তাই মহানবী (সা.) ও অন্যান্য নেককার মুমিনদের কবরকেও সম্মান করে সুধারণার ভিত্তিতে রওজা বলা যায়।

মাজার অর্থ জিয়ারতের স্থান। মহানবী (সা.), সাহাবায়ে কেরাম, ওলি, দরবেশসহ যে কোনো নেককার বা মুমিন ব্যক্তির কবরকে মাজারও বলা যায়। কারণ মুমিনের কবরমাত্রই জিয়ারতের স্থান। আল্লাহর রাসুল (সা.) নিজে মুমিনদের কবর জিয়ারত করতেন এবং সাহাবিদেরও কবর জিয়ারত করতে উৎসাহ দিতেন।

রাসুল (সা.) বলেন, কবর জিয়ারত করুন, কারণ কবর জিয়ারত দুনিয়ার আকর্ষণ কমিয়ে দেয় ও পরকালের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। (সুনানে ইবনে মাজা: ১৫৭১)

সুতরাং যে কোনো মুসলমানের কবরই অন্য মুসলমানদের জন্য মাজার বা জিয়ারতের স্থান।

ওএফএফ

Read Entire Article