কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে খতনা অনুষ্ঠানে ঘটেছে তুলকালাম কাণ্ড। মাংস চেয়ে তার বদলে আমন্ত্রিত অতিথিদের বারবার ঝোল দেওয়ায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৪ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার দুপুরে মনোহরপুর গ্রামের রাশিদুল ইসলামের ছেলে রাফিউরের খাতনার অনুষ্ঠান ছিল। ওই অনুষ্ঠানে রাশিদুল আত্মীয়স্বজন প্রতিবেশী মিলিয়ে কয়েকশ ব্যক্তিকে দাওয়াত দেন। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। শেষ মুহূর্তে বিকেল ৩টার দিকে মাংসের বদলে ঝোল দেওয়া নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
রাশিদুলের আত্মীয় আকবর হোসেনের স্ত্রী-সন্তান মিলে ৭-৮ জন এক টেবিলে খেতে বসেন। এ সময় চান্নু নামে এক ব্যক্তি খাবার পরিবেশনে দায়িত্বে থাকা রাশিদুলের শ্যালক শহিদুলকে মাংসের গামলায় ঝোল থাকায় তা পরিবর্তন করে মাংস দিতে বলেন। এ নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে তর্ক বাধে। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। শুরু হয় চেয়ার-টেবিল ছোড়াছুড়ি। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষ থামে শেষ পর্যন্ত পুলিশি হস্তক্ষেপে।
আহতরা হলেন- মনোহরপুর গ্রামের আকবরের ছেলে মাহফুজুর রহমান (২০) ও চান্নু হোসেন (৩৫), কয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪৫) এবং ইয়াকুব আলীর ছেলে জামিরুল (১৯)। এর মধ্যে মাহফুজুরের মাথা ফেটে যাওয়াসহ শরীরে আঘাত গুরুতর হওয়ায় কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে আহত মাহফুজুর রহমান বলেন, মাংসের গামলায় মাংসের চেয়ে ঝোলের পরিমাণ বেশি ছিল। পরিবর্তন করে আনার জন্য বলা হলেও শহিদুল বারবার ঝোলই নিয়ে আসছিল। এ নিয়ে একটু আপত্তি জানালে তিনি আমার সঙ্গে তর্ক করেন। এক পর্যায়ে শহিদুল আমাকেসহ আমার টেবিলে বসা অন্যদের ওপরও চড়াও হন। এতে আমিসহ কয়েকজন আহত হই। চেয়ার দিয়ে মেরে আমার মাথা ফাটিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে থানায় মামলা করবেন বলেও জানান তিনি।
রাফির বাবা রাশিদুল ইসলাম জানান, মাংসের ঝোল নিয়ে প্যান্ডেলে একটু হট্টগোল হয়েছে। পরে বিষয়টি ঠিক হয়ে গেছে।
খাবার পরিবেশনের দায়িত্বে থাকা শহিদুল জানান, চান্নু মাহফুজুরদের মাংস দিলেও তারা ইচ্ছাকৃতভাবে হয়রানি করছিল। এক পর্যায়ে ওরাই আমার ওপর চড়াও হয় এবং মারধর করে। তবে আমি কাউকে আঘাত করিনি। আমার হাতে কেউ আহতও হয়নি।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার এসআই সোহাগ শিকদার জানান, খতনার অনুষ্ঠানে খাবার পরিবেশকদের সঙ্গে আমন্ত্রিত অতিথিদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। পরে আমরা গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেই। তবে এ সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন আহত হয়েছে বলেও জানতে পারি। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পায়নি। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।