মাইগ্রেনের ব্যথায় অতিষ্ঠ? মুক্তি পেতে পান করুন এই ৭ পানীয়

3 hours ago 3

যিনি একবার মাইগ্রেনের ব্যথায় ভুগেছেন, তিনি জানেন এর যন্ত্রণা কেবল মাথাব্যথা নয়, বরং জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকেই এলোমেলো করে দেয়। হঠাৎ করেই মাথার ভেতর তীব্র চাপ, চোখ ঝাপসা হয়ে যাওয়া, আলো-শব্দ অসহ্য লাগা, সঙ্গে বমি বা বমি বমি ভাব— সব মিলিয়ে এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা, কখনো টানা কয়েক দিন ধরে চলতে থাকা এই ব্যথা মানুষকে কর্মক্ষমতা থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। অনেকেই তাৎক্ষণিক স্বস্তির জন্য ব্যথানাশক ওষুধ খোঁজেন, কিন্তু দীর্ঘদিন এসব ওষুধ খেলে দেখা দিতে পারে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে ব্যথা কমানোর বিকল্প খোঁজেন কেউ কেউ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের আশপাশেই এমন কিছু পানীয় রয়েছে, যা নিয়মিত গ্রহণ করলে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা অনেকটাই হালকা হতে পারে এবং শরীরও সতেজ থাকবে। 

চলুন তবে জেনে নিই, কোন কোন পানীয় মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে—


১. গ্রিন টি

মাইগ্রেন ও মাথাব্যথায় আরাম পেতে গ্রিন টি পান করতে পারেন। গ্রিন টিতে থাকা পলিফেনল, স্যাপোনিন, ভিটামিন মাথা ব্যথা ও মানসিক চাপ কমাতে বিশেষভাবে কাজ করে। এই পানীয়টি মানসিক চাপ ও উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখে। সেই সঙ্গে গ্রিন টির তাজা ঘ্রাণ মনকে রাখবে ফুরফুরে।


২. ক্যাফেইনমুক্ত কফি

খেজুর বীজের কফি ক্যাফেইনমুক্ত কফি। এটি অ্যান্টি অক্সিড্যান্টে ভরপুর। এতে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক, ম্যাগনেশিয়াম ও আয়রন আছে, যা মাইগ্রেনের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। এই কফি বানাতে খেজুরের বীজ পরিষ্কার করে নিতে হবে। এবার এই বীজগুলো তাওয়ায় ভেজে নিতে হবে। ভাজা বীজগুলো ঠান্ডা করে কফি গ্রাইন্ডারে মিহিভাবে চূর্ণ করে নিলেই কফি হয়ে যাবে। এবার প্রয়োজনমতো গরম পানিতে খেজুরের বীজের কফি মিশিয়ে পান করতে পারবেন।


৩.পুদিনা চা

পুদিনা চায়ে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা স্নায়ুর উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পুদিনায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মাথা ও ঘাড়ের পেশি শিথিল রাখে। মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। গরম পানিতে কয়েকটি পুদিনা পাতা ফুটিয়ে সেই পানীয় পান করুন। মাইগ্রেনের ব্যথা কমে যাবে।


৪. আদা-চা

মাইগ্রেনের ব্যথাসহ যে কোনো মাথাব্যথা এমন কি মানসিক চাপে আদা-চা বেশ কার্যকর। আদায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহনাশক গুণ রয়েছে, যা মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পানিতে কয়েক টুকরো আদা ফুটিয়ে পানীয় তৈরি করে নিন। চায়ের মতো করে সকাল-সন্ধ্যায় এ পানীয় পান করুন। এটি বমি এবং বমি বমি ভাব কমাতেও সাহায্য করে।

৫. শাক-সবজির স্মুদি

সবুজ শাক-সবজির স্মুদি মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে পারে। সবুজ শাক-সবজিতে থাকা বিটা-ক্যারোটিন ও ম্যাগনেসিয়ামের কম মাত্রা মাইগ্রেনের মাথাব্যথার তীব্রতা কমাতে পারে।


৬. ফলের রস

সবুজ শাক-সবজির মতো কিছু ফলের রসে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকে। ইউএস ফুড ডেটা সেন্ট্রাল অনুসারে, এক গ্লাস কমলার রসে ১১ মিলিগ্রাম এবং আঙ্গুরের রসে ১০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম থাকে।


৪. পর্যাপ্ত পানি পান করুন

মাইগ্রেনের অন্যতম কারণ শরীরে পানির ঘাটতি, অর্থাৎ পানিশূন্যতা। পানিশূন্যতায় শরীরে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়, মাথায় চাপ বাড়ে এবং ব্যথা শুরু হয়। মাইগ্রেনের সময় অনেকের বেশি ঘাম বা বমি হয়। তাই দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে ব্যথা উপশম হবে এবং নতুন করে মাইগ্রেন প্রতিরোধ করাও সম্ভব হবে।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

Read Entire Article