মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় দুই সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। শুক্রবারের (২৮ মার্চ) ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা পৌঁছে দিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ এরই মধ্যে ২০ লাখ মানুষের জরুরি মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা জানিয়েছে।
সামরিক জান্তার বরাত দিয়ে শনিবার (২৯ মার্চ) রাতে জানানো হয়, ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৪৪ জনে। ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও লাশ উদ্ধার হওয়ায় এই সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে ম্যান্ডালয় ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
চীন, রাশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার রেসকিউ টিমসহ বিভিন্ন দেশ ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে। চীন ১০০ মিলিয়ন ইউয়ান (১৩.৭৭ মিলিয়ন ডলার) ত্রাণ তহবিল দিয়েছে। জাতিসংঘ প্রাথমিকভাবে ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লাখ ডলার সহায়তা ঘোষণা করেছে।
যুদ্ধবিরতির শর্তাবলি
এনইউজির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় দুই সপ্তাহ শুধুমাত্র প্রতিরক্ষামূলক কার্যক্রম চালাবে, এনইউজি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় জাতিসংঘ ও এনজিওদের সাথে সমন্বয় করে ত্রাণ শিবির স্থাপন করা হবে এবং জান্তা নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে চিকিৎসকরা আন্তর্জাতিক সংস্থাদের সাথে কাজ করবেন।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়কারী মার্কোলুইজি কর্সি বলেছেন, ভূমিকম্পের আগেই মিয়ানমার সংঘাত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানবিক সংকটে পড়েছিল। এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন, সড়ক ধ্বংস ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে ত্রাণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এদিকে, একই ভূমিকম্পে ব্যাংককে ধসে পড়া টাওয়ার ব্লক থেকে আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করে নিহতের সংখ্যা ১৮ এ পৌঁছেছে। এখনও ৭৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন, যাদের বেশিরভাগ নির্মাণ শ্রমিক।
এই সংকটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ভূমিকম্পপরবর্তী ত্রাণ কার্যক্রমে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চলমান সংঘাত ও অবকাঠামোগত ধ্বংসযজ্ঞ। এনইউজির যুদ্ধবিরতি ঘোষণা কতটা কার্যকর হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
সূত্র: নিক্কেই এশিয়া
এসএএইচ