মুদ্রাস্ফীতি রোধ করতে গিয়ে মন্দা সৃষ্টির বাজেট: সিপিবি

3 months ago 64

‘এ বাজেট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট। সেই হিসেবে এটি একটি অনির্বাচিত সরকার প্রণীত বাজেট। স্বভাবতই এতে কোনো কাঠামোগত মৌলিক পরিবর্তনের সুযোগ নেই। তবে কিছু পদচিহ্ন রেখে যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু সেরকম কোনো চমক বাজেট দেখাতে পারেনি।’

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স বাজেট পরবর্তী এক বিবৃতিতে একথা বলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এবারের বাজেট শুধু গতানুগতিক নয়, চমকহীনও বটে। উপরন্তু এবারের বাজেট হয়েছে সংকোচনমূলক ও মন্দার বাজেট। এ বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও আইএমএফের নির্দেশ অনুযায়ী ‘বেল্ট টাইট’ করে ব্যয় কমানোর জন্য সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’

‘মোট বাজেটের আয়তন, মোট উন্নয়ন ব্যয়, মোট ঋণপ্রবাহ এক কথায় উৎপাদনশীল ব্যয় প্রসারের ওপর এই বাজেটে কোনো মনোযোগ দেওয়া হয়নি। ফলে আগামীতে প্রবৃদ্ধির যে টার্গেট ঠিক করা হয়েছে ৬ শতাংশের মতো, তা কার্যকর হবে না। বিশ্বব্যাংকের প্রক্ষেপণই বলে দেয় এই প্রবৃদ্ধির হার ৩ শতাংশের কাছাকাছি নেমে যেতে পারে। ফলে একথা প্রায় নিশ্চিত যে, আগামীতে প্রবৃদ্ধি কমবে, বেকারত্ব বাড়বে এবং দারিদ্র্য বাড়বে।’

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ‘এবারের বাজেটের প্রত্যাশা ছিল লুটপাটকারীদের টাকা, পাচারকারীদের টাকা, ঋণখেলাপি ও কালো টাকার মালিকদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করে বাজেটের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও দারিদ্র্য বিমোচনে অন্তবর্তী সরকার বিশাল পরিমাণ ব্যয় করতে স্বচেষ্ট হবে। বৈষম্য কমিয়ে আনার জন্য অতি ধনীদের কাছ থেকে সম্পদ কর আদায় করে বাজেটকে আরও বৈষম্যবিরোধী ও অভ্যন্তরীণ সম্পদনির্ভর করা হবে। কিন্তু এ দিক দিয়ে সুদের বোঝা ও রাজস্ব তোলায় ব্যর্থতার জন্য বাজেট তা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।’

এতে আরও বলা হয়, ‘কিছু সামান্য এদিক-ওদিক শুল্ক বাড়ানো-কমানো ও নিম্ন আয়ের মানুষের করছাড় ও সামাজিক সুরক্ষার আওতায় কিছু সংস্কার ছাড়া বাকি সব জায়গায় কোনো পদচিহ্নই রাখতে পারেনি। তাছাড়া সুদের হার বেশি, ছোট-মাঝারি শিল্প, কৃষকের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, তেল-গ্যাস বিদ্যুৎ খরচ বৃদ্ধি এবং আমদানি করা কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতির দাম বৃদ্ধির কারণে এই বাজেটের নিম্ন-মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও কৃষকের মধ্যে কোনো সুখবর নেই।’

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ‘এই বাজেট তাই গণতান্ত্রিকও নয়। যেসব পদচিহ্ন রেখে যাওয়ার বড় বড় কথা অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, তা তার বাজেটে শেষ পর্যন্ত আর স্থান পায়নি। এখন মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং টাকার মান কিছুটা স্থির করতে সরকার সক্ষম হয়েছে বটে। তবে এই বাজেটে সেটা নিশ্চিত করতে গিয়ে মন্দা, বেকারত্ব, বিদেশনির্ভরতার বিপদ ডেকে আনার সমূহ আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।’

ইএআর/এএসএ/এমএস

Read Entire Article