মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে স্কুলছাত্রীকে রেখে পালিয়ে যায় ঘাতক

4 hours ago 5

‎লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে বাগানের পরিত্যক্ত স্থানে নিয়ে হাত-পা বেঁধে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয় ২য় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে। একপর্যায়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এতে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ঘরে ফিরে যায় ঘাতক। এ ঘটনায় ঘাতক ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে কমলনগর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে রামগতির বালুরচর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃত ওই নারীর নাম আরজু আক্তার (৩০)। তিনি উপজেলার চরফলকন ইউনিয়নের হাওলাদার বাড়ির অজি উল্যাহর মেয়ে। আর ভুক্তভোগী ওই শিশুর নাম তাহমিনা আক্তার সাদিয়া (৯)। সে উপজেলার মধ্য চরফলকন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্রী।

এর আগে ঘটনাটি শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্ত আরজুকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান দেয়। পরে রোববার ভোরে রামগতির বালুরচর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ঘটনায় রোববার সকালে সাদিয়ার মা নারগিস বেগম বাদী হয়ে কমলনগর থানায় মামলা করেন।

‎পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, চরফলকন ইউনিয়নের হাওলাদার বাড়ির নারগিসের মেয়ে ২য় শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া কানে এক আনা ওজনের স্বর্ণের দুল ব্যবহার করছে। এটি দেখে একই বাড়ির অজি উল্লাহর মেয়ে আরজু আক্তার ওই স্বর্ণের লোভে পড়ে। লোভ সামলাতে না পেরে শনিবার বেলা ৩টার দিকে আরজু সাদিয়াকে খেলাধুলা করার কথা বলে ফুসলিয়ে তাদের ঘর থেকে নিয়ে যায়। পরে আরজু সাদিয়াকে অটোরিকশায় করে মেঘনা নদীর পাড়সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরায়।  

এরপর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে করুণানগর বাজার হয়ে ফজুমিয়ারহাট বাজারের পশ্চিমে কিল্লার রাস্তার পাশে জোরপূর্বক সাদিয়ার কানের দুল খুলে নেয়। তখন সাদিয়া কান্নাকাটি করলে আরজু তাকে চড়-থাপ্পড় মারে। সেখান থেকে রিকশা করে চর লরেঞ্চ বাজারে গিয়ে একটি জুয়েলারি দোকানে ওই স্বর্ণের দুল ৭ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি করে দেয় আরজু। 

এতে স্বর্ণের দুলের জন্য মেয়ের কান্নাকাটি বন্ধ না হলে আরজু শিশু সাদিয়াকে তাদের বাগানের পরিত্যক্ত স্থানে নিয়ে হাত-পা বেঁধে ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। একপর্যায়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সাদিয়া অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এতে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে আরজু তার ঘরে চলে যায়। 

কিছুক্ষণ পর মেয়ের জ্ঞান ফিরলে বিদ্যুতের আলো দেখে সাদিয়া পার্শ্ববর্তী হাবিব উল্লাহ পাজাল বাড়িতে গিয়ে ওঠে। এর আগে সাদিয়ার মা নারগিস বেগম তার মেয়েকে না পেয়ে পুরো এলাকা খুঁজে বেড়ায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই শিশু মেয়েকে দেখে বাড়ির লোকজন চিনতে পেরে দ্রুত কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাদিয়াক লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। 

‎কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, মূলত স্বর্ণের জন্য শিশু সাদিয়াকে আঘাত করে অভিযুক্ত আরজু বেগম। মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে হাত বেঁধে যে স্থানে ফেলে এসেছে তাতে শিশুটিকে বাঁচার কথা নয়; শিশুটি অলৌকিকেভাবে বেঁচে গেছে। এ ঘটনায় আমরা মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। এর সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Read Entire Article