জেলা প্রশাসনের সঙ্গে পরিবহন নেতাদের বৈঠকের পর ময়মনসিংহ থেকে সব রুটে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) আট ঘণ্টা পর রাত ১০টা থেকে বাস চলাচল শুরু হয়।
ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের ইউনাইটেড বাস কাউন্টারে অতর্কিত হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির গঠন করা হয়েছে। অন্য সদস্যরা হলেন পরিবহন মালিক সমিতির সদস্য একজন, পরিবহন শ্রমিক সমিতির সদস্য একজন ও কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
এ ছাড়া ইউনাইটেড পরিবহন থেকে আওয়ামী লীগের মালিকদের গাড়ি বের করে দিয়ে ময়মনসিংহের মালিকদের গাড়ি বাড়ানো বিষয়ে ঢাকার পরিবহন নেতাদের সাথে কথা বলে পদক্ষেপ নিতে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়।
জেলা প্রশাসক মুফিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম, জেলা পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আলমগীর মাহমুদ আলম, মহাসচিব রতন আকন্দ, জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি নজরুল ইসলামসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দুপুর ১ টায় মোটরসাইকেলযোগে ৫০-১০০ জনের একটি দল নগরীর মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ডে ইউনাইটেড পরিবহনের টিকিট কাউন্টার অতর্কিত হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে।
এ সময় কাউন্টারে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয় এবং কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় ইউনাইটেড পরিবহনসহ সকল পরিবহনের বাস।
এ ঘটনার তথ্য ছড়িয়ে পড়লে নগরীর পাটগুদাম বাসস্ট্যান্ডসহ কয়েকটি স্থানে এলোপাতাড়ি যানবাহন রেখে সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে পরিবহন শ্রমিকরা। এতে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা, শেরপুর, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, জামালপুরসহ আন্তঃজেলা পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জেলা পরিবহন মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা মো. শরাফ উদ্দিন কোহিনূর বলেন, ময়মনসিংহে ইউনাইটেডের ব্যানারে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে ৯০ বাস চলাচল করছে।
এর মধ্যে ঢাকার পরিবহন নেতা সাইফুল বাতেনের ৬০টি, ময়মনসিংহের জন্য ৩০টি বাস রয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল হক শামীমের রয়েছে ১৩টি ও মালিক সমিতির নেতাদের রয়েছে ১৭টি বাস।
চাহিদার তুলনায় সড়কে বাসের সংখ্যা বেশি হওয়ায় ব্যবসায় মন্দাভাব শুরু হয়েছে। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মাঝে অসন্তোষ চলছিল।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল হক শামীমের বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। পুলিশের কাছে তিনি পলাতক। কিন্তু অদৃশ্য ক্ষমতায় গত এক বছর ধরে বিভিন্ন ব্যানারে এসইপিএলর ৭০-৮০টি গাড়ি চলাচল করছে। এ নিয়ে অনেকের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।
জেলা মোটর মালিক সভাপতি আলমগীর মাহমুদ আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দুপুরের দিকে মাসকান্দা কাউন্টারে ভাঙচুর ও লোটপাটের ঘটনা ঘটনায় একদল দুর্বৃত্ত। পরে শ্রমিকরা বৃহত্তর ময়মনসিংহে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা।
পরে রাতে জেলা প্রশাসনের সাখে আলোচনা করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই ঘটনার সাথে কারা জড়িত তদন্তে মাধ্যমে প্রকৃত দোষীরা বেরিয়ে আসবে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের আগে যারা বাসস্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণ করতো এখনও তারা করছে, এমন অভিযোগে অজ্ঞাতরা ভাঙচুর চালিয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের সাথে বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক সমিতির নেতারা আলোচনা করে বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।