ময়মনসিংহে স্বামীকে হত্যায় পরকীয়া প্রেমিকসহ স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক জজ আলী মনসুর এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার গোরকপুর গ্রামের আমান উল্লাহর ছেলে মো. লিয়াকত আলী (৩৬) ও তার পরকীয়া প্রেমিকা একই গ্রামের কাজিম উদ্দিনের মেয়ে মোছা. সাবিনা খাতুন (৩৩)।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবিনা খাতুন একই এলাকার লিয়াকত আলীর ঢাকার বাসায় থেকে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। সেই থেকে লিয়াকত তার স্ত্রীর অগোচরে সাবিনা খাতুনের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে করোনার সময় ২০২১ সালে লিয়াকত সপরিবারে ঢাকা থেকে নিজ বাড়ি গোরকপুরে ফিরে আসেন। সাবিনা খাতুনও ঢাকা থেকে ফিরে তার বাবার বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন।
এদিকে একই গ্রামের হযরত আলীর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর একাই ছিলেন। পরে সামাজিক আলোচনার মাধ্যমে হযরত আলীর সঙ্গে বিয়ে হয় সাবিনা খাতুনের। সংসার করার সময় প্রায়ই লিয়াকত আলী হযরত আলীর বাড়িতে যাতায়াত করে সাবিনা খাতুনের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে যেতে থাকেন।
ঘটনার মাসখানেক আগে হযরত আলী তার ঘরে সাবিনা খাতুন ও লিয়াকত আলীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে উভয়কে গালমন্দ করেন। এরকম অবস্থায় অনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার পথে আসামি লিয়াকত ও সাবিনা খাতুন হযরত আলীকে বাধা মনে করে। তারা হযরত আলীকে হত্যার জন্য পরিকল্পনা করেন।
ঘটনার দিন ২০২১ সালের ২৯ আগস্ট রাত ৮টার দিকে সাবিনা খাতুন মোবাইলে হযরত আলীকে আসামি মো. লিয়াকত আলীর সঙ্গে দেখা করতে বলে। হযরত আলী গোরকপুর বাজারে লিয়াকতের সঙ্গে দেখা করতে গেলে কৌশলে একই উপজেলার কুতিকুড়া আঁতলা বিলে নিয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর মরদেহ মাটিতে পুঁতে রাখে এবং হযরত আলীকে হত্যার বিষয়টি মোবাইলে সাবিনাকে জানায় লিয়াকত। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
মঞ্জুরুল ইসলাম/আরএইচ/এমএস