যখনই ভাবলাম, নিজেকে একটু ভালোবাসি…

2 hours ago 4

জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাহনাজ খুশির আজ (১৫ নভেম্বর) জন্মদিন। ক্যারিয়ার এবং সংসার দুটোই সমান গুরুত্ব ও কৃতিত্বের সঙ্গে চালিয়ে নিচ্ছেন এই অভিনেত্রী। জন্মদিনে কথা হলো তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মিজানুর রহমান মিথুন।

জাগো নিউজ: জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
শাহনাজ খুশি: অসংখ্য ধন্যবাদ।

জাগো নিউজ: কেমন আছেন?
শাহনাজ খুশি: এখন বেশ ভালো আছি। গত কয়েক মাস খুব একটা ভালো সময় কাটেনি। কারণ বৃন্দাবন দা’র (বৃন্দাবন দাস, শাহনাজ খুশির স্বামী) চেকআপে প্রোস্টেট সমস্যা ধরা পড়েছিল। তাকে চিকিৎসা করাতে দিল্লিতে নিয়ে গিয়েছিলাম। যদিও এটা গত মার্চ মাসের ঘটনা। চিকিৎসার জন্য আমরা দিল্লিতে প্রায় এক মাস ছিলাম। সেখানেই তার অপরেশন হয়েছে। বাসায় কেউ অসুস্থ থাকলে যা হয়, আমরা সবাই মানসিকভাবে ভীষণ বিপর্যস্ত ছিলাম। আগস্ট মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত লেগেছে তার সুস্থ হতে। এখন বৃন্দাবন বেশ ভালো আছে। আবারও নাটক লেখায় মনোনিবেশ করেছেন।

যখনই ভাবলাম, নিজেকে একটু ভালোবাসি…

জাগো নিউজ: এখন কী কী কাজে ব্যস্ত আছেন?
শাহনাজ খুশি: বৃন্দাবনের অসুস্থতার কারণে সেই মার্চ থেকে আগস্ট, টানা ছয়-সাত মাস কাজ করতে পারিনি। সম্প্রতি নতুন একটি সিরিয়ালে কাজ শুরু করেছি। সেটা মাছরাঙা টিভিতে দেখাবে। নাটকটার নাম ‘বিশ্বাস বনাম সরদার বাড়ি’। এরই মধ্যে এর প্রথম লটের কাজ শেষ হয়েছে। একসঙ্গে ২৬ পর্বের শুটিং হয়েছে। গত ১৩ নভেম্বর শুটিং শেষ হয়েছে। সিরিয়ালটি বানাচ্ছেন সকাল আহমেদ।

জাগো নিউজ: আপনি একজন সফল অভিনেত্রী, সফল মা ও নাট্যকার বৃন্দাবন দাসের সফল ঘরনি। কেমন উপভোগ করলেন জার্নিটা?
শাহনাজ খুশি: আমার কাছে সফলতা কোনো স্থায়ী শব্দ নয়। আমি সব সময় অল্পতে তুষ্ট থাকার চেষ্টা করি। আমি খুবই গুছিয়ে জীবনযাপন করতে পছন্দ করি। সংসার ও সন্তানদের সুন্দর ও তুষ্ট রাখতে পারা আমার জন্য আত্মতৃপ্তির।

যখনই ভাবলাম, নিজেকে একটু ভালোবাসি…

জগো নিউজ: দীর্ঘদিন ধরে অভিনয় করে যাচ্ছেন। অভিনয়ের বাইরে আর কী করতে ইচ্ছে করে?
শাহনাজ খুশি: এখন আমার লেখালেখি করতে ভীষণ ইচ্ছে করে। মন চায় সব সময় বিভিন্ন ধরনের বই পড়ি এবং লিখি। এখন আমার সংসারের ছোটখাটো ব্যস্ততা কমে গেছে। বাচ্চারা বড় হয়েছে। এখন তো আর তাদের লেখাপড়া, স্কুলে নিয়ে যাওয়া, এসব করতে হয় না। কলেজে গিয়ে তাদের আনার জন্য বসে থাকতে হয় না। এখন তাদের সব কাজ তারা নিজেরাই করতে পারে। ফলে এখন মনে হয়, একটু বেশি করে পড়াশোনা করি। বেশি করে লেখালেখি করি। আসলেই এখন লিখতে খুব ইচ্ছে করে।

জাগো নিউজ: কী ধরনের লেখায় আগ্রহ আপনার?
শাহনাজ খুশি: জীবনের উপলদ্ধির কথা। একজীবনের দীর্ঘ জার্নির কথা লিখতে ইচ্ছে করে। আমার জীবনটা সহজ-সরল রেখার মতো ছিল না। বিশাল বিশাল উত্থান-পতনের মধ্যদিয়ে আমার পথচলা। আমার জীবনে বিশাল বিশাল বাঁক আছে। যেগুলোতে মানুষ ভেঙে পড়ে। কিন্তু আমি কখনো ভেঙে পড়িনি। আমি সব সমস্যার মাঝেও হাল ধরে দাঁড়িয়ে থাকার চেষ্টা করেছি। সেই সমস্যাগুলো অতিক্রম করতে আমার দীর্ঘ সময় লেগেছে। জীবনের এই জার্নিটা আমার কেমন ছিল, সেই জার্নির আত্মোপলদ্ধি আমি লিখতে চাই। জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার মধ্যদিয়ে নতুন নতুন মানুষ চিনতে চেষ্টা করেছি। এসব লেখা এখন ছোটো ছোটো করে লিখছি। তবে এগুলো আরও বড় করে লিখতে ইচ্ছে হয়। সেটা হোক প্রবন্ধ, হোক গল্প, যে আঙ্গিকেই হোক না কেন, আমি লিখে রেখে যেতে চাই। এগুলো একান্তই আমার জীবনবোধের গল্প।

যখনই ভাবলাম, নিজেকে একটু ভালোবাসি…

জাগো নিউজ: লেখাগুলো দিয়ে নিশ্চয়ই বই প্রকাশ করবেন?
শাহনাজ খুশি: আমি লিখে রাখছি আমার মতো করে। যদি কোনোদিন সুযোগ হয়, হয়তো বই আকারে প্রকাশ করবো। সেই সুযোগ না হলে লেখাগুলো এভাবেই থেকে যাবে। কত বড় বড় মানুষের পাণ্ডুলিপিই তো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

জাগো নিউজ: আপনি কি কোনো পাণ্ডুলিপি তৈরি করেছেন?
শাহনাজ খুশি: এখনই বই আকারে প্রকাশের জন্য কোনো পাণ্ডুলিপি তৈরি করা নেই। সুযোগ হয়নি। মাত্র ভাবছিলাম, বাচ্চারা বড় হয়েছে, এখন আমি একটু লেখালেখি করি…। যখনই ভাবলাম, এখন নিজেকে একটু ভালোবাসি, নিজেকে একটু সময় দিই, একটু গভীরভাবে চিন্তা করি। ঠিক সেই সময়ে বৃন্দাবনের এই অসুস্থতা। পুরো ২০২৪ সালটা গেছে আমার এর পেছনে। এখন একটু পড়াশোনা করতে চাই। নিজের মতো করে সময় কাটাতে চাই।

যখনই ভাবলাম, নিজেকে একটু ভালোবাসি…

জাগো নিউজ: আপনাকে আবারও শুভেচ্ছা, ধন্যবাদ।
শাহনাজ খুশি: আপনাকেও।

এমএমএফ/আরএমডি/জেআইএম

Read Entire Article