যমুনায় নৌবন্দরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে জরিপ শুরু

2 hours ago 2
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে নৌবন্দর গড়ে তুলতে যমুনা নদীতে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ ইনল্যান্ড সার্ভে ভেসেল ঝিনাই-২ জাহাজ এই জরিপের কাজ শুরু করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, খুব শিগগির নৌবন্দর ঘোষণা হতে পারে।  এদিকে, বগুড়া জেলার ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে অতিদ্রুত সারিয়াকান্দিতে নৌবন্দর গড়ে তোলার জোর দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। জানা গেছে, অনেক আগে থেকেই বগুড়াসহ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার যাত্রীরা সারিয়াকান্দি-মাদারগঞ্জ নৌরুট ব্যবহার করে ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করেন। এ নৌপথ দিয়ে জামালপুর হয়ে ঢাকার দূরত্বও কম।  তাই সারিয়াকান্দি-মাদারগঞ্জ নৌরুট ব্যবহার করে প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী বগুড়া এবং জামালপুর জেলায় যাতায়াত করে। তারা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট নৌকা দিয়ে উত্তাল যমুনা পাড়ি দেন। এসব নৌকায় ছাউনি না থাকায় যাত্রীরা প্রখর রোদে পুড়ে বা বৃষ্টিতে ভিজে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়ে যাতায়াত করেন।   যাত্রীদের কষ্টের কথা চিন্তা করে কয়েক বছর আগে এ নৌরুটে সি-ট্রাক সার্ভিস চালু করে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু যমুনার নাব্য সংকটে এবং সি-ট্রাকের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অব্যাহত লোকসানে বন্ধ হয়ে যায় এই সার্ভিসটি। সারিয়াকান্দিতে কয়েক বছর ধরেই পলিমাটি জমে যমুনা নদীর অববাহিকায় বিশালাকার কৃষিজমি সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে প্রতি বছর বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলে। পরিবহন ব্যবস্থা ভালো না থাকায় এসব ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে প্রতি বছরই বঞ্চিত হন কৃষকরা। উৎপাদিত ফসল সহজে বাজারজাত করে ফসলের ন্যায্যমূল্য পেতে এবং সারিয়াকান্দি-মাদারগঞ্জ নৌরুটের লাখো যাত্রীর সুবিধার্থে সারিয়াকান্দিতে নৌবন্দর চায় এলাকাবাসী, যা তাদের বহুদিনের স্বপ্ন। এলাকাবাসীর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সারিয়াকান্দিতে নৌবন্দর গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজ। কয়েক মাস আগে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহম্মেদ মোস্তফা সারিয়াকান্দি নৌঘাট পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে তিনি এখানে নৌবন্দর গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সম্ভাব্যতা যাচাই করতে একটি সার্ভে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছেন। বিআইডব্লিউটিএ ইনল্যান্ড সার্ভে ভেসেল ঝিনাই-২ জাহাজটি কয়েক দিন ধরেই সারিয়াকান্দি নৌঘাটে অবস্থান করছে। সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমান কালবেলাকে বলেন, এলাকাবাসীর সুবিধার কথা বিবেচনা করে জেলা প্রশাসক সারিয়াকান্দিতে নৌবন্দর গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেন। তার ভিত্তিতে বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান সারিয়াকান্দি নৌঘাট পরিদর্শন করেন এবং নৌবন্দর গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলমান রয়েছে। সব ঠিক থাকলে সারিয়াকান্দিতে নৌবন্দর হবে। বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা কালবেলাকে বলেন, সারিয়াকান্দিতে নৌবন্দর গড়ে উঠলে এ অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোসহ রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বিকল্প পথে সহজে যোগাযোগ করা সম্ভব। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। এগিয়ে যাবে বগুড়ার অর্থনীতি, চরাঞ্চলের কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পেয়ে সমৃদ্ধ হবেন।
Read Entire Article