যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং অঙ্গসহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের নবন্না পার্টি সেন্টারে এক দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মুজিবুর রহমান মজুমদার।
সভার শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা মাওলানা ওমর ফারুক পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এবং বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন। এতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়। একইসঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদ ও জুলাই ’২৪-এর শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়।
পরে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ও আমেরিকার জাতীয় সংগীত এবং বিএনপির দলীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আধুনিক বাংলাদেশ এবং বিএনপির ৩১ দফা।
জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মোশারফ হোসেন সবুজ, সদস্য সচিব স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক মাকসুদুল হক চৌধুরী সভা পরিচালনা করেন।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মহান স্বাধীনতার ঘোষণা, স্বাধীনতা পরবর্তী সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পুনর্গঠনসহ আধুনিক বাংলাদেশ গঠনের পেছনের ইতিহাস তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গণতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন, তাই তিনি বাংলাদেশকে একটি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিশ্বের মানচিত্রে প্রতিষ্ঠা করেছেন। রাষ্ট্র বিনির্মাণে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সততা মেধা এবং দক্ষতাকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আপোসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা এবং ১৯৯১ সালের জনগণের ভোটে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সাজানো মামলায় কারাগারে প্রেরণ করলেও তিনি গণতন্ত্রের প্রশ্নে স্বৈরাচারের সঙ্গে আপস করেন নাই। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে তিনি আগামী দিনের বাংলাদেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেন।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য দীর্ঘ ১৫ বছর তারেক রহমান যেই আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারই ফলশ্রুতিতে আজকের বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।
পৃথিবীর সব দেশের গণআন্দোলনের শেষে জনগণের ভোটাধিকার সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে, তারই ফলস্বরূপ তিনি বাংলাদেশের অনতিবিলম্বে যৌক্তিক সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজনের জন্য জোরালোভাবে দাবি জানান। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. মুজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশে যারা সরকার গঠনের দায়িত্ব পেয়েছিলেন, তারা বাংলাদেশকে গণতন্ত্রবিহীন এবং জনদুর্ভোগের রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন এবং ক্ষমতায় থাকার জন্য বাকশাল কায়েম করেছিলেন।
কিন্তু মহান মহান রাব্বুল আল আমিন ’৭৫-এর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের মাধ্যমে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ব্যক্তিগত সততা মেধা এবং দক্ষতার মাধ্যমে আধুনিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার এবং একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সত্যিকারি অর্থে একটি সুন্দর জীবনযাপন করতে শুরু করেছিল। কিন্তু দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাকে হত্যা করে বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিকে স্তম্ভিত করে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্রের উত্তরণ ঘটে। আধুনিক বাংলাদেশকে সামনে থেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ পুনরায় শুরু হয়েছিল, কিন্তু ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপিকে ১/১১ করে ক্ষমতা থেকে ১৫ বছর দূরে সরিয়ে রাখা হয়।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা মোতাহার হোসেন, সাবেক ছাত্রনেতা জুনায়েদ আল জাফরি, আবু সুফিয়ান, শাহ আলম, নাছিম আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন, কাজী জামান, মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া, মৃধা মোহাম্মদ জসীম, নুরে আলম, হাবিবুর রহমান হাবিব, মাযহারুল ইসলাম মিরন, আবুল কালাম, আজিজুল বারি তিতাস, অধ্যাপক আহসান উল্লাহ মিন্টু, ব্যারিস্টার জিন্নুর রাইন চৌধুরী, সেলিনা আক্তার, যুবদলের সাবেক সহসভাপতি শহীদুল্লাহ তালুকদার, যুব নেতা মোহাম্মদ কাশেম, মো. মাসুদ হোসেন, আশরাফুজ্জামান আশরাফ, রাশেদ রহমান, ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, হুমায়ুন কবির, জসিম উদ্দিন ফিরোজ আলম, সাইফুল ইসলাম সৈকত ভূঁইয়া, আমিনুল ইসলাম, বাবর, আক্তার হোসেন, ডা. রফিকুল ইসলাম, রুহুল আমিন, শাহীন আলম, আব্দুস সোবাহান প্রমুখ।