ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেছেন, ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্য তার সরকারকে উৎখাত করা। যদি মার্কিন বাহিনী আক্রমণ করে তবে তিনি ‘সশস্ত্র প্রজাতন্ত্র ঘোষণা’ করতে প্রস্তুত।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মাদুরো। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বেশ কড়া ভাষায় মন্তব্য করেন। মাদুরো বলেন, ভেনেজুয়েলা শান্তি চায় কিন্তু তার সেনাবাহিনী মার্কিন বাহিনীর যেকোনো আক্রমণের জবাব দিতে প্রস্তুত। তারা সামরিক হুমকির মাধ্যমে শাসন পরিবর্তন চাইছে। গত ১০০ বছরে আমাদের মহাদেশে দেখা সবচেয়ে বড় হুমকির মুখোমুখি ভেনেজুয়েলা।
তিনি সশস্ত্র প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, যদি ভেনেজুয়েলায় আক্রমণ করা হয়, তাহলে আমরা আমাদের ভূখণ্ডের প্রতিরক্ষায় অবিলম্বে সশস্ত্র সংগ্রামে (জনযুদ্ধ) নামব।
মাদুরো আরও বলেন, এই সর্বোচ্চ সামরিক চাপের মুখে, আমরা ভেনেজুয়েলার প্রতিরক্ষার জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি ঘোষণা করেছি। যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলাকে লক্ষ্য করে ১,২০০ ক্ষেপণাস্ত্র এবং একটি সাবমেরিনসহ আটটি সামরিক জাহাজ পাঠিয়েছে।
দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর মোতায়েনের খবরে কয়েক সপ্তাহ ধরেই মাদুরো উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। ওয়াশিংটন বলছে, ল্যাটিন আমেরিকান মাদক চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি অভিযান করা হবে। এরপরই ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
প্রতিক্রিয়ায় ভেনেজুয়েলার নেতা দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছেন এবং দেশকে রক্ষা করার জন্য হাজার হাজার নাগরিককে সশস্ত্র মিলিশিয়ায় যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন।
মার্কিন নৌবাহিনীর বর্তমানে ক্যারিবীয় অঞ্চলে দুটি এজিস গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রয়ার-ইউএসএস গ্রেভলি এবং ইউএসএস জেসন ডানহাম-রয়েছে। ল্যাটিন আমেরিকার জলসীমায় ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস স্যাম্পসন এবং ক্রুজার ইউএসএস লেক এরিসহ কয়েকটি জাহাজ মোতায়েন অবস্থায় রয়েছে।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্স সংবাদ সংস্থাকে জানান, একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত দ্রুত আক্রমণকারী সাবমেরিন মোতায়েনরত নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত করা হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস সংবাদ সংস্থা আরও জানিয়েছে , আগামী দিনে এই বাহিনী আরও সম্প্রসারিত হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে ৪,০০০ নাবিক এবং মার্কিন মেরিনসহ উভচর আক্রমণকারী জাহাজ অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার মাটিতে কোনো সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা এখনও ঘোষণা করেনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন মাদুরোর বিরুদ্ধে এই অঞ্চলজুড়ে মাদক পাচার এবং অপরাধমূলক সংগঠনের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের অভিযোগ এনেছে। তবে তারা এখনও পর্যন্ত কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।