যুদ্ধবিরতি হলেও ভিন্ন আতঙ্কে গাজার বাসিন্দারা

9 hours ago 5

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও এখন ভিন্ন এক আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে উপত্যকার বাসিন্দারা। ইসরায়েলি বাহিনীর ফেলে যাওয়া অবিস্ফোরিত বোমার আকষ্মিক বিস্ফোরণের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে।টানা দুই বছরের ইসরায়েলি বোমা হামলায় বিধ্বস্ত এলাকায় বাস্তুচ্যুত মানুষ ও ত্রাণকর্মীরা ফিরতে শুরু করায় এই হুমকি আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।

গাজায় অবিস্ফোরিত গোলাবারুদের মারাত্মক ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের মাইন অ্যাকশন সার্ভিস (ইউএনএমএএস)। দখলকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইউএনএমএএস-এর প্রধান লুক ডেভিড আর্ভিং বলেন, মানুষ ও মানবিক সহায়তাকর্মীরা যখন এসব এলাকায় চলাচল শুরু করেছে, তখন বিস্ফোরণের ঝুঁকি ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে। অন্য সংঘাতের মতোই গাজাতেও যুদ্ধ শেষ হলেও এসব বোমা সাধারণ মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করে যাচ্ছে।

আর্ভিং আরও বলেন, যুদ্ধবিরতির ফলে আমরা যত বেশি এলাকায় প্রবেশ করতে পারছি ততই আরও বিস্ফোরক পাওয়া যাচ্ছে।

যুদ্ধবিরতির পর গত সপ্তাহে অবিস্ফোরিত বোমার বিস্ফোরণে পাঁচ শিশু আহত হয়েছে, যার মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর। এমন তথ্য দিয়ে তিনি আরও বলেন, এটি এমন শত শত ঘটনার একটি উদাহরণ যেখানে শিশু ও সাধারণ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে বা আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে।

ইউএনএমএএসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ৩২৮টি ঘটনায় মানুষ অবিস্ফোরিত বোমার বিস্ফোরণের কারণে নিহত বা আহত হয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

এ পর্যন্ত সংস্থাটি গাজার প্রবেশযোগ্য এলাকাগুলোতে ৫৬০টি অবিস্ফোরিত বোমা শনাক্ত করেছে। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ জরিপ না হওয়া পর্যন্ত এর প্রকৃত পরিমাণ জানা সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে।

যাতে মানবিক সহায়তা নির্বিঘ্নে পৌঁছানো যায় তাই সংগঠনটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো যেমন রাস্তা, হাসপাতাল, পানি সরবরাহ কেন্দ্র, বেকারি ও কৃষি এলাকা পর্যবেক্ষণ করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, অক্টোবর ১০ তারিখে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবার পর থেকে ইউএনএমএএস প্রতিদিন গড়ে ১০টি করে বিস্ফোরক অপসারণের জন্য ডাক পাচ্ছে।

বাসিন্দারা যখন ধ্বংসস্তূপে ফিরে নিজেদের সামান্য সম্পদ উদ্ধার করতে বা শিশুরা বাইরে খেলতে বের হচ্ছে, তখনও এই বোমা বিস্ফোরণের ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। ত্রাণকর্মীরাও এই বিপদের মুখে কাজ করছেন।

ইউএনএমএএস এখন পর্যন্ত গাজায় প্রায় ৪৬০,০০০ মানুষকে ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করেছে। সংস্থাটি ৪ লক্ষাধিক প্রচারপত্র, স্টিকার ও শিক্ষামূলক সামগ্রী বিতরণ করেছে।

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের গণহত্যামূলক অভিযানে ৬৮ হাজার ২০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

সূত্র : দ্য আরব নিউজ
কেএম

 

Read Entire Article