চোখের চাহনি, প্রাণবন্ত হাসি আর স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয়-এই তিনেই যেন গড়ে উঠেছে হানিয়া আমির নামের এক বিশেষ আকর্ষণ। খুব অল্প সময়েই তিনি হয়ে উঠেছেন পাকিস্তানি টেলিভিশনের সবচেয়ে প্রিয় মুখগুলোর একটি। হানিয়ার অভিনয়ে আছে তারুণ্যের উচ্ছ্বাস, বাস্তবতার ছোঁয়া আর আবেগের গভীরতা। পর্দায় কখনও তিনি মিষ্টি এক কলেজছাত্রী, কখনও বেদনার ভেতর লুকোনো এক সাহসী নারী। তার প্রতিটি চরিত্র যেন জীবনের গল্প বলে, তাই দর্শকও তাকে খুঁজে পায় নিজেদের ভেতর।
এই যাত্রায় কিছু নাটকই হয়ে উঠেছে হানিয়ার ক্যারিয়ারের মোড় ঘোরানো অধ্যায়-যেগুলো শুধু জনপ্রিয়তাই এনে দেয়নি, বরং প্রতিষ্ঠিত করেছে তাকে এক অনন্য অভিনেত্রী হিসেবে। সেই স্মরণীয় নাটকগুলো নিয়েই আজকের আয়োজন।
মেরে হমসফর: রোমান্টিক-ড্রামা ঘরানার এই নাটক হানিয়া আমিরকে এনে দিয়েছে আন্তর্জাতিক পরিচিতি। এখানে তিনি হালা চরিত্রে অভিনয় করেন, যাকে ছোটবেলা থেকেই পরিবারে অবহেলা করা হয়।
জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে অবজ্ঞা আর কষ্ট সয়ে বড় হওয়া হালা শেষমেশ খুঁজে পায় সত্যিকারের ভালোবাসা। হানিয়ার অভিনয়ে হালার দুর্বলতা, লড়াই আর মানসিক শক্তি দর্শককে গভীরভাবে ছুঁয়ে যায়।
সাঙ এ মাহ: এটি একটি সামাজিক ইস্যুভিত্তিক নাটক, যেখানে উপজাতীয় সংস্কৃতির নানা দিক উঠে এসেছে। হানিয়া এখানে ঘাগ চরিত্রের ভুক্তভোগী এক নারীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।
তার চরিত্রের যন্ত্রণা ও প্রতিবাদী মানসিকতা নাটকটিকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। হানিয়ার চোখের ভাষা আর সংলাপ-উচ্চারণ দর্শকের মনে গেঁথে থাকে।
ভিসাল: এই নাটকে হানিয়া আমির ছিলেন পারি চরিত্রে, যে সরল-সাদামাটা স্বভাবের হলেও ভাগ্যের খেলায় জড়িয়ে পড়ে এক জটিল সম্পর্কে। হাসান খান ও সাবা হামিদের সঙ্গে তার অভিনয় রসায়ন নাটকটিকে করেছে প্রাণবন্ত।
রোমান্স, ট্র্যাজেডি ও পারিবারিক দ্বন্দ্ব-সব মিলিয়ে নাটকটি দর্শকের কাছে দারুণ জনপ্রিয়তা পায়।
ফির ওয়াজুদ: এখানে হানিয়া এক দৃঢ়চেতা ও আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন নারীর চরিত্রে অভিনয় করেন। সমাজ ও পরিবারে নারীর অবস্থান, ভালোবাসার জন্য লড়াই এবং ব্যক্তিত্ব ধরে রাখার গল্প এই নাটককে বিশেষ করে তুলেছে।
তার অভিনয়ে একাধারে কোমলতা ও দৃঢ়তার মিশেল দর্শকের মনে গভীর ছাপ ফেলে।
ইশকিয়া: হানিয়া আমির এখানে রুমি চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যে পরিবার, প্রেম আর বিশ্বাসঘাতকতার টানাপোড়েনে পড়ে যায়। ফারহান সাঈদ ও ফেরোজ খানের সঙ্গে অভিনয়ে তার রসায়ন নাটকটিকে অন্য মাত্রা দিয়েছে।
প্রেম, ঈর্ষা আর প্রতিশোধের মিশ্রণে তৈরি নাটকটি ছিল টিআরপি তালিকার শীর্ষে।
হানিয়া আমিরের জনপ্রিয়তা শুধু তার সৌন্দর্যে নয়, বরং প্রতিটি চরিত্রে প্রাণ ঢেলে দেওয়ার ক্ষমতায়। কখনো ভালোবাসায় ভরা মেয়ে, কখনো বঞ্চিত নারী, আবার কখনো প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর-তিনি সব ভূমিকাতেই নিজের অভিনয়কে ভিন্ন মাত্রায় উপস্থাপন করেছেন। তার নাটকগুলো প্রমাণ করে, হানিয়া আমির শুধু এক উদীয়মান নায়িকা নন, বরং টেলিভিশনের ভুবনে একজন শক্তিশালী অভিনেত্রী।
জেএস/