সুস্থভাবে বেঁচে থাকা আর শরীরে পর্যাপ্ত শক্তি উৎপাদনের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরি। খাবারে থাকে ৬টি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা শরীর নামক যন্ত্রের যাবতীয় কলকব্জা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
খাবারের ৬ উপাদানের মধ্যে ভিটামিন অন্যতম। শরীরকে সুস্থ রাখতে এই ভিটামিন বড় ধরনের সহায়তা করে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, মানবদেহে জিনের প্রকাশ, বিপাক এবং কোষের পরিপক্কতা ও পার্থক্য নিয়ন্ত্রণের জন্য ভিটামিনের ভূমিকা অপরিসীম। খাবারে ভিটামিনের অভাব তাই ঘটাতে পারে বিভিন্ন রোগসহ ভয়ংকর ক্যানসারও।
ক্যানসারের জন্য ভিটামিনের অপর্যাপ্ততাকে দায়ী করা হয়ে থাকে। সাধারণত পর্যাপ্ত ভিটামিনযুক্ত খাবার না খেলে ক্যান্সার হতে পারে। এ কারণে ভিটামিনযুক্ত খাওয়া নিয়ে হেলাফেলা করার কোন সুযোগ নেই। সুস্থ, রোগহীন জীবন পেতে প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত ভিটামিন নিশ্চিত করতে হবে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন ভিটামিনের অভাবে আমাদের শরীরে ক্যান্সার বাসা বাঁধতে পারে।
অ্যাসকরবিক অ্যাসিড ভিটামিন সি-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি ইমিউনোলজিক্যাল প্রতিক্রিয়া, যা ক্ষত নিরাময় ও কোলাজেন গঠনের জন্য অপরিহার্য। কিছু রোগের উচ্চমাত্রায় ঝুঁকির সঙ্গে ভিটামিন সি’র অভাব যুক্ত বলে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে। বিশেষ করে খাদ্যনালী, পাকস্থলী এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে এই ভিটামিনের অভাব। লেবু, স্ট্রবেরি, কিউই ফল, মরিচ, ব্রোকলি, পালং শাকসহ বিভিন্ন খাবারে পর্যাপ্ত পরিমানে রয়েছে ভিটামিন সি।
ভিটামিন ডি’র অভাবে স্তন, প্রোস্টেট, কোলোরেক্টাল এবং অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। ভিটামিন ডি মূলত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ক্যালসিয়ামের অভাব পূরনের মাধ্যমে হাড়ের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। বর্তমান বিশ্বের জনসংখ্যার বড় একটি অংশ ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিতে ভুগছে। চর্বিযুক্ত মাছ, মাংস, মাশরুম, কুমড়াসহ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন বিভিন্ন খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। ডিম, দুধ ও দই এই ভিটামিনের উৎকৃষ্ট উৎস।
ভিটামিন এ দেহকোষের বিকাশ, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং দৃষ্টিশক্তির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান হিসেবেই পরিচিত। ভিটামিন এ-এর কার্যকরী রূপ রেটিনয়েড নামে পরিচিত। গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন এ এর অভাব পাকস্থলী, খাদ্যনালী ও ফুসফুসের ক্যান্সার সহ কিছু ধরণের ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা বাড়াতে অনেকবেশী সক্রিয়। গাজর, কুমড়ো, পাকা পেঁপে, ঘি, মাখন ও অন্যান্য সব্জি ও ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'এ' থাকে। এছাড়া ভিটামিনযুক্ত খাবারের অন্যতম উপাদান সেলেনিয়ামের অভাবেও ত্বক, ফুসফুস, প্রোস্টেট ও কোলোরেক্টাল ক্যান্সার হতে পারে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।