‘রক্তাক্ত পথকে কলঙ্কিত করার ষড়যন্ত্র চলছ’

1 month ago 21

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, জুলাই-আগস্টের এই রক্তে রাঙানো পিচ্ছিল রাস্তাকে কলঙ্কিত করার জন্য আওয়ামী লীগ ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের লোক আমার দলের মধ্যেও ঢুকেছে। হাসিনা বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের সজাগ থাকতে হবে। যুদ্ধ শেষ হয় নাই, খেয়াল রাখতে হবে। আমরা কিন্তু ক্ষমতায় আসি নাই। এখন ক্ষমতায় আছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার নিমগাছী অনার্স কলেজ মাঠ চত্বরে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে রায়গঞ্জ, তাড়াশ ও সলঙ্গা থানা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইকবাল মাহমুদ টুকু বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমরা তারই ভাবশিষ্য হিসেবে মনে করি বিএনপি ক্ষমতায় তখনই আসতে পারবে, যখন এই দেশের মানুষ তাদের ভোট দেবে।

তিনি বলেন, ১৬ বছর আমরা মিটিং করতে পারি নাই, চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে পারি নাই। সবাই দেখেছে কীভাবে আমাদের কর্মীদের নির্যাতন করা হয়েছে। সারা বাংলাদেশকে কয়েদখানায় পরিণত করা হয়েছিল। ১৬ বছর লড়াই করে আজকে মুক্ত আকাশ দেখেছি। অথচ আওয়ামী লীগকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের পর খুঁজে পাওয়া যায় নাই। ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের টিকিটাও দেখা যাচ্ছে না। আমরা ১৬ বছর নির্যাতন সয়েছি, একটা কর্মী পালাই নাই, হাজারো নির্যাতন-অত্যাচার সহ্য করে দাঁড়িয়ে ছিল। আজও দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের যত বেশি নির্যাতন করেছে, তত কর্মী বেড়েছে।

সাবেক এই মন্ত্রী আরও বলেন, আমি যখন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা করছিলাম, আমার কাছে খবর এলো, খুনি হাসিনার বাকশালী কোর্ট আমাকে ৯ বছরের সাজা দিয়েছে। হসপিটালে বসে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। আমি হাসিনা সরকারের কোনো সাজার কাছে মাথা নত করব না। আমি হাসিনার রায় মানি নাই। হাসিনার জেলে আমি যাব না। হাসিনা আমাকে কয়েদি বানিয়ে মাটিতে শোয়াই রাখবে। আমি মনে করেছি, আজকের টেকনোলজিতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করব। যতগুলো আন্দোলন হয়েছে, আমি বিদেশ থেকে যোগাযোগ করে আন্দোলন পরিচালনা করেছি।

টুকু বলেন, হাসিনা নিজের বাড়া ভাতও খেতে পারে নাই। যে জনগণকে অত্যাচার করেছে, সেই জনগণই তার বাড়া ভাত খেয়েছে। এটাকে বলে আল্লার বিচার। আল্লাহ বলেছেন অহঙ্কার করো না, অহঙ্কারের মালিক আমি। হাসিনার এমন দম্ভ হয়ে গিয়েছিল, এমনভাবে কথা বলেছিল, মনে হয় আল্লাহর পরেই সে। আল্লাহ ফেরাউনকে পর্যন্ত রক্ষা করেনি। আর আপনি হাসিনা কে। বেগম জিয়াকে পদ্মা নদীতে টুপ করে ফেলে দিতে চেয়েছিল। ইউনূসকে টুপ করে ফেলে তিনবার চুবানোর কথা বলেছিল। আজকে আপনি কোথায়, যেখানে আপনি দেশকে দিয়েছিলেন, তাদের কাছে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

সংখ্যালঘুদের বিষয়ে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, বিএনপি সংখ্যালঘুদের জন্য সবচেয়ে বেশি সুব্যবস্থা করেছে। হিন্দু, মুসলিম খ্রিষ্টান যারা আছে, সবাই আমাদের আমানত। কেউ তাদের নির্যাতন করতে পারবে না; কিন্তু আওয়ামী লীগ চেষ্টা করছে বাংলাদেশে একটা রায়ট করার জন্য। আমরা সবাই চেষ্টা করব, এই চেষ্টা যেন ফলপ্রসূ না হয়। এখন যা কিছু হবে, বিএনপির ওপর দোষ আসবে। কেউ যেন বলতে না পারে, বিএনপি সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার করছে।

রায়গঞ্জ উপজেলা বিএনপি সভাপতি শামছুল ইসলামের সভাপতিত্বে জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক এমপি আব্দুল মান্নান তালুকদার, জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, সলঙ্গা থানা বিএনপির সভাপতি মতিয়ার রহমান সরকার, তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি স ম আফসার আলী, রায়গঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি মো. হাতেম আলী সুজন, তাড়াশ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক তপন কুমার গোস্বামী প্রমুখ।

Read Entire Article