রাতের আঁধারে বালু পাচার, এসপি-ডিসির ঠ্যালাঠেলি

2 days ago 6

সুনামগঞ্জের ধোপাজান চলতি নদী। যে নদীর বালু লুটকে কেন্দ্র করে ১৭ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার আ.ফ.ম আনোয়ার হোসেন প্রত্যাহার হয়েছেন। ফলে কিছুদিন নদীপথে বালু লুট বন্ধ থাকলেও চক্রের সদ্যরা তাদের কৌশল পরিবর্তন করে সড়ক পথে জেলার বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে বালু।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধোপাজান চলতি নদী থেকে অবৈধভাবে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করছে বালাকান্দা, জিনারপুরসহ ৪ থেকে ৫ গ্রামের মানুষ। পরে সেই বালু তারা ট্রাকভর্তি করে জেলার নানা স্থানে বিক্রি করছে। পুলিশ সুপারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জেলা প্রশাসক ইজারা দিয়েছেন কি না জানতে চান। ইজারা না দিলে অবৈধ বালুভর্তি ট্রাক আটকের কথাও জানান। তবে ইজারা দেওয়ার ক্ষমতা তার নেই বলে জানান জেলা প্রশাসক।

নদীপথের বালু সড়ক পথে লুট করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এমন তথ্য নিশ্চিত করতে রোববার (২৩ মার্চ) রাত ১টায় পৌর শহরের আব্দুজ জহুর সেতুর এক প্রান্তের অন্ধকারে অবস্থান নেন এ প্রতিবেদক। রাত যখন ১টা ২০ মিনিট তখন এক এক করে আব্দুজ জহুর সেতুর পাশে পুলিশের সামনে দিয়ে অবৈধ বালুভর্তি ট্রাক আসতে শুরু করে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর প্রতিবেদক সেখানে উপস্থিত হতেই সেখানে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা রাস্তার এক পাশে দ্রুত সরে যায়। ফলে ক্যামেরা তাদের দিকে ঘোরাতেই তারা ট্রাকগুলোকে পেছনে যেতে ইশারা শুরু করে।

সেখানে পুলিশের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা বালু লুটের এক সিন্ডিকেট সদস্য তখন সাংবাদিকদের দেখে দৌড়ে পালান। তাৎক্ষণিক সেই বালুভর্তি ট্রাকের ভিডিও ‘সুনামগঞ্জ পুলিশ মিডিয়ায়’ দেওয়া হলেও সুনামগঞ্জের নবাগত পুলিশ সুপার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

রাতের আঁধারে বালু পাচার, এসপি-ডিসির ঠ্যালাঠেলি

অভিযোগ রয়েছে, বালু সিন্ডিকেট চক্রটি জেলার সদর থানা ও বিশ্বম্ভরপুর থানাকে ম্যানেজ করেই ট্রাকভর্তি বালু নিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতেও প্রায় ৯০টির মতো ট্রাক দিয়ে ধোপাজান চলতি নদীর বালু লুট করা হয়েছে।

তবে এই অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বিশ্বম্ভরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোখলেছুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, গতকাল রাতে একজন আমাকে ফোন দিয়ে বলেছিল ট্রাক বের হচ্ছে, তখন আমি সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে এসব বন্ধ করে দিয়ে আসি।

তবে চালবন পয়েন্টে পুলিশ চেকপোস্ট থাকাকালীন কীভাবে বালুভর্তি গাড়ি বের হয় সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার পুলিশ সদস্য এর সঙ্গে জড়িত থাকলে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানাবো।

সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম জাগো নিউজকে বলেন, আমি স্যারের সামনে আছি। পরে কথা বলবো।

সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার তোফায়েল আহাম্মেদ জাগো নিউজকে বলেন, শত শত বালুভর্তি ট্রাক যাচ্ছে। ডিসি মহোদয়কে জিজ্ঞেস করেন, উনি কোনো ইজারা দিয়েছেন কি না। আর ইজারা না দিলে উনি আমাদেরকে বলুক, আমরা এসব অবৈধ ট্রাক আটক করবো।

তবে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ইজারা দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। তবে অব্যশই মোবাইল কোর্ট করে আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এফএ/জেআইএম

Read Entire Article