আমাদের অনেকেরই অভ্যাস – রান্নার সময় কোনো কিছু সেদ্ধ করে গরম পানিটা সরাসরি সিঙ্কে ফেলা দেওয়া। অনেকে আবার সিঙ্কের পাইপ জ্যাম হয়ে গেলে তাতে ফুটন্ত পানি ঢেলে দেন। কিন্তু এই কাজটি কি আপনার জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে?
এতে হয়তো কাজটা সহজ মনে হয়, কিন্তু এই অভ্যাস আপনার রান্নাঘরের পাইপলাইনের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
কী সমস্যা হয়?
আগের দিনে অনেক বাসায় পানির লাইনে কপার বা কাস্ট–আয়রনের পাইপ ব্যবহার হতো। এসব ধাতব পাইপ গরম পানি সহজেই সামলাতে পারত। কিন্তু আধুনিক রান্নাঘরে এখন আর ধাতব পাইপ ব্যবহার করা হয় না।
বর্তমান সময়ের বেশিরভাগ রান্নাঘরে ব্যবহৃত হয় পিভিসি পাইপ, যা মূলত এক ধরনের প্লাস্টিক। সাধারণ প্লাস্টিকের চেয়ে শক্তিশালী হলেও এগুলোর তাপ সহ্য করার ক্ষমতা ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়। কিন্তু ফুটন্ত পানি থাকে প্রায় ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এত উচ্চ তাপমাত্রার পানি পিভিসি পাইপের ভেতরে ফেললে তা সহজেই নরম হয়ে বা বেঁকে যেতে পারে।
আবার জোড়ার স্থানে আঠা গলে তা ঢিলাও হয়ে যেতে পারে। ফলে সিঙ্কে সরাসরি গরম পানি ঢালার ঝুঁকি এখন কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। আবার যদি সিঙ্কের ড্রেন আগে থেকেই খানিকটা বন্ধ হয়ে থাকে, তবে ক্ষতির আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়। কারণ তখন গরম পানিটা এক জায়গায় অনেকক্ষণ আটকে থাকে।
তাহলে বিকল্প উপায় কী?
>> সিঙ্কে না ফেলে ফুটন্ত পানি কী করবেন? সমাধান খুব সহজ। গরম পানি ফেলার দরকার হলে তা ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন। ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পানির তাপমাত্রা কমে আসলে তা সিঙ্কে ফেলে দিন।
>> অনেকসময় তাৎক্ষণিকভাবে পানি ফেলার দরকার হতে পারে। এমন ক্ষেত্রে পানি ঢালার সময় সিঙ্কের ট্যাপে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি চালু ছেড়ে দিন, যাতে পাইপের ভেতরে তাপমাত্রা ভারসাম্যে থাকে।
>> সিঙ্ক ব্লক হয়ে গেলে গরম পানি দিয়ে তা পরিষ্কার করার চেষ্টা না করে প্লাঞ্জার বা ড্রেন স্নেক ব্যবহার করুন। এতে সমস্যা সমাধান হবে পাইপের কোনো ক্ষতি ছাড়াই।
বিষয়টি এমনিতে খুব ছোট অভ্যাস মনে হলেও সিঙ্কে ফুটন্ত পানি ঢালার কারণে দীর্ঘমেয়াদে বড় খরচের মুখোমুখি হতে পারেন। তাই সামান্য সতর্কতা অবলম্বন করুন, যা আপনার রান্নাঘরের পাইপলাইনকে সুরক্ষিত রাখতে পারে বছরের পর বছর।
সূত্র: সাউদার্ন লিভিং
এএমপি/এএসএম