দুটি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) শুনানি ঘিরে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার সমর্থকেরা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা।
রোববার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানার সমর্থকেরা। এ কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য ও সরাইল উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ও শাহবাজপুর ইউনিয়ন শাখা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমান মুন্সি।
অবরোধকারীরা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে মহাসড়কের দুদিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। দেখা দেয় ভোগান্তি।
সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে যান সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশারফ হোসাইন, সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী ও সরাইল খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম। তাদের অনুরোধে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন অবরোধকারীরা।
আরও পড়ুন
- সিইসির সামনে বিএনপি-এনসিপি নেতাকর্মীদের হাতাহাতি
- ১৫ বছর বিএনপির জন্য লড়াই করলাম, তারাই এখন ধাক্কা দেয়
অবরোধ কর্মসূচি থেকে বক্তরা বলেন, রুমিন ফারহানা শুধু আমাদের এলাকার নেত্রী নন। তিনি জাতীয় নেত্রী। তার ওপর ঢাকায় হামলার প্রতিবাদে আমরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছি। ইউএনও এবং ওসির অনুরোধে আজকে আমরা সরে এসেছি।
তারা বলেন, যারা হামলা করেছে, তাদের গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় পরবর্তীসময়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। রুমিন ফারহানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন নিয়ে যে মতামত দিয়েছেন, আমরা তার পক্ষে রয়েছি।
অন্যদিকে, ইসিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহর ওপর বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার সমর্থকদের হামলার অভিযোগে রোববার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি থেকে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, রুমিন ফারহানা ও তার সহযোগীরা গণতন্ত্রের নামে সন্ত্রাসী কায়দায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করছেন। নির্বাচন কমিশনের শুনানিস্থলকে রণক্ষেত্রে পরিণত করে তারা প্রমাণ করেছেন, জনগণের রায়ের ওপর তাদের আস্থা নেই।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুটি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ শুনানি শুরু হয়। জেলার বিজয়নগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসন থেকে কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ)-এর সঙ্গে যুক্ত করার খসড়া করেছে নির্বাচন কমিশন। এ ইউনিয়নগুলো হলো বুধন্তী, চান্দুরা ও হরষপুর।
আরও পড়ুন
শুনানিতে নির্বাচন কমিশনের এই প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন রুমিন ফারহানা। এর বিপক্ষে যুক্তি দেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ। তিনি ওই তিন ইউনিয়নকে বিজয়নগর উপজেলাতেই দেখতে চান বলে মত দেন।
এরই একপর্যায়ে দুই পক্ষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং জড়িয়ে পড়ে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতিতে।
আবুল হাসনাত মো রাফি/এমকেআর