গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক লাকী আক্তার ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের গ্রেপ্তার, তিন মাসের মধ্যে ধর্ষণের বিচার নিষ্পত্তিসহ পাঁচ দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগে শান্তিপূর্ণ এই আন্দোলন চলবে বলে ঘোষণা দেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী।
বুধবার (১২ মার্চ) বিকালে রাজধানীর শাহবাগে এক মানববন্ধনে এ ঘোষণা দেন তিনি।
হাদী বলেন, গত ১৪ বছরে যে ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে, হাজার হাজার আয়নাঘর গড়া হয়েছে, আল্লামা সাঈদীকে চিকিৎসার নামে হত্যা করা হয়েছে, হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে আমাদের ভাইবোনদের কলিজা ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া হয়েছে সেগুলো যে কায়েম করেছে সেই অসভ্যতার নাম শাহবাগ, শাহবাগ, শাহবাগ।
তিনি বলেন, গত পনের বছরে মোল্লাদের এমনভাবে প্রান্তিক করা হয়েছে যখন তারা কোনো কিছুর জন্য দাঁড়ায় তখন তারা মব মব বলে চিল্লাচিল্লি করে। আমরা সচিবালয়সহ অনেক জায়গায় দাঁড়িয়েছি কিন্তু কেউ বলতে পারবে আমরা পুলিশের গায়ে হাতে দিয়েছি?
ইনকিলাব মঞ্চের ঘোষিত পাঁচ দাবি হলো- ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা এবং মিথ্যা মামলাকারীর বিচার করতে হবে; দেশকে অস্থিতিশীল করতে মব তৈরি করে পুলিশের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে; শাহবাগের কসাই লাকী আক্তার ও অন্যদের গ্রেপ্তার করে ২০১৩ সালের সকল ষড়যন্ত্র উন্মোচিত করতে হবে; জাতিসংঘকে অন্তর্ভুক্ত করে শাপলা ও সকল গণহত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করা এবং জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার শুরু করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হাদী বলেন, কোন ধরনের উসকানি ছাড়া এক শাহবাগী পুলিশের ওপর লাঠি ছুড়েছে। পুলিশ কমিশনার মামুনকে উপর্যুপুরি মারধর করেছে। এরপর সাত-আটজন সন্ত্রাসী তার ওপর আক্রমণ করেছে। কেউ বলতে পারবেন গতকাল পুলিশের হাতে লাঠি ছিল?
হাদী বলেন, গতকাল তারা গেছে ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে কিন্তু তারা স্লোগান দিয়েছে ইউনূসের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সর্বশেষ ট্রাম কার্ড হিসেবে শাহবাগীদের ব্যবহার করেছে। তারা আনসার, টোকাই, রিকশাওয়ালা হিসেবে ফিরে এসেছে। আমরা শাহবাগী হলে তাদের শাহবাগে লটকিয়ে রাখতাম। কিন্তু আমরা শাহবাগী না, তাই আমরা সরকারের কাছে বিচার চাই।
বিচারের দাবিতে হাদী বলেন, অন্তত এক হাজার কারণ রয়েছে এই খুনি লাকীদের জেলখানায় থাকার জন্য কিন্তু এই লাকী আজকেও মিছিল করেছে। তোমাদের বিষ দাঁত আমরা উপরে ফেলব। এদের বিচার সরকারকে করতে হবে, করতে হবে।
মানববন্ধনে ইনকিলাব মঞ্চের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবেদ বলেন, নতুন করে শাহবাগ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। শাহবাগের লাকী এখন রাস্তায় অথচ তাদের জেলে থাকার কথা। নতুন করে কেউ শাহবাগ গড়ার চিন্তা করলে আপনারা ভুল ভাবছেন।
ঢাবি শাখার সদস্য সচিব ফাতিমা আক্তার ঝুমা বলেন, ধর্ষণের প্রতিবাদে মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে, সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে কিন্তু তারপরও যারা এই শাহবাগে বিচার না চেয়ে ফাঁসি চেয়েছে, আলেমদের হত্যা করতে সহযোগিতা করেছে তারা আজকে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। যেই শাহবাগেকে খারিজ করে চব্বিশ হয়েছে সেখানে আর কখনো শাহবাগ হবে না, বিচারহীনতার সংস্কৃতি হবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের, এই লাকী আক্তারদের ঘুড়ি বাংলার আকাশে কিন্তু নাটাই ভারতের হাতে। তাদের এই উদ্দেশ্য আমরা বেঁচে থাকতে সফল হতে দিব না।