লিবিয়ায় নিখোঁজ শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের ২৩ যুবকের পরিবারের মানববন্ধন

2 weeks ago 8

ইতালি যাওয়ার পথে লিবিয়ায় নিখোঁজ শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের ২৩ যুবকের পরিবার মানববন্ধন করেছে। পরিবারের সদস্যদের খুঁজে পেতে তারা এই মানববন্ধন আয়োজন করে। রোববার (০৮ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 

এই ঘটনায় শরীয়তপুর জেলা পুলিশ মামলা না নিলে গত ১ নভেম্বর লিবিয়ায় নিখোঁজ রাশিদুল ইসলামের বাবা সেলিম জমাদ্দার বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে, শরীয়তপুর মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন ট্রাইব্যুনালে, একটি মানব পাচারের মামলা করেন।

এদিকে মানববন্ধন দেখতে এলে অভিযুক্ত দুই দালালের এক সহযোগীকে গণধোলাই দেন ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা। পরে ওই দালালের সহযোগী আহত অবস্থায় পালিয়ে যান (তার নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি)। ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা জানান, শরীয়তপুর সদর উপজেলার নুরুল ইসলাম খানের দুই যমজ ছেলে কামরুজ্জামান টুন্নু খা (৪২) ও রাসেদ খাঁ (৪২) লিবিয়া দিয়ে ইতালির নেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীর পরিবারদের কাছে ১৩ লাখ থেকে ২৫ লাখ করে টাকা নেন। টাকা নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন দালাল চক্রের সদস্যরা। ভুক্তভোগীরা মামলার কথা বললে, পরিবারের কাছ থেকে নেওয়া ফাঁকা চেকের মাধ্যমে দেখানো হচ্ছে মামলা ও হামলার ভয়।

মানববন্ধন শেষে লিবিয়ায় নিখোঁজ রাশিদুল ইসলামের বাবা সেলিম জমাদ্দার বলেন, দালাল টুন্নু খা ও রাশেদ খান আমার ছেলেকে লিবিয়া দিয়ে ইতালি পাঠানো কথা বলে আমার কাছ থেকে কয়েক দফায় ১৮ লাখ টাকা নিয়েছে। লিবিয়ায় নিয়ে আমার ছেলেসহ ২৫ জনকে টুন্নু ও রাশেদ, মাফিয়াদের হাতে তুলে দেয়। পরে আমার ছেলে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে আমার কাছে মুক্তিপণের জন্য আরও ১৫ লাখ টাকা দাবি করে। পরে আমার ছেলেকে বাঁচাতে রাশেদ ও টুন্নুকে ২০ শতাংশ জমি লিখে দিই। এত কিছুর পরও আজ এক বছর ধরে আমার ছেলের কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। এই দুই দালালকে আটক করলে আমার ছেলের খবর পাওয়া যাবে। 

লিবিয়ায় নিখোঁজ দিদার আকনের স্ত্রী আছিয়া বেগম বলেন, যখন আমার গর্ভে ছয় মাসের সন্তান, তখন আমার স্বামী লিবিয়ায় যান। তাকে ইতালিতে নিয়ে যাওয়ার কথা। আমার স্বামী আমার অনাগত সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারেনি। আমার সন্তানকে আমি কী জবাব দেব। সে তার বাবাকে হারিয়ে ফেলেছে। এখন আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই। 

এ ঘটনায় দালাল রাশেদ ও টুন্নুকে মোবাইলে কল দিলে তাদের ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে তারা এলাকা থেকে পলাতক রয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কচি হেলাল উদ্দিন মোবাইল ফোনে কালবেলাকে বলেন, এ বিষয়ে শরীয়তপুর আদালতে একটি মানব পাচার মামলা হয়েছে। আদালত থেকে আমরা নির্দেশনা পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা শিগগিরই কাজ শুরু করব।

Read Entire Article