সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় লোকালয় থেকে একটি অজগর সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের গুটিলা গ্রাম থেকে অজগরটি উদ্ধার করে বন বিভাগ।
তাহিরপুর উপজেলার দায়িত্বরত বনবিট কর্মকর্তা রতীন্দ্র কিশোর রায়ের নেতৃত্বে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, সাপটি মেঘালয়ের কোনো পাহাড়ি এলাকা থেকে বাংলাদেশের লোকালয়ে চলে এসেছে।
রতীন্দ্র কিশোর রায় জানান, এটি একটি অজগর সাপের বাচ্চা। সাপটি লম্বায় আনুমানিক প্রায় সাড়ে পাঁচ ফুট।
রতীন্দ্র কিশোর রায় আরও জানান, আব্দুল মালেকের বাড়িতে অজগরটি আটকা পড়েছিল। সেখান থেকে সাপটিকে উদ্ধার করে সিলেটে স্নেক রেসকিউ টিমকে খবর দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, অজগর নির্বিষ সাপ। এটি নিশাচর ও খুবই অলস প্রকৃতির, প্রয়োজন ছাড়া নড়াচড়াও করে না। এই প্রজাতিটি গাছে একাকী বাস করলেও শুধু প্রজননকালে জোড়া বাধে। সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে এদের প্রজননকাল। দেশের ম্যানগ্রোভ বন, ঘাসযুক্ত জমি, চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ পাহাড়ি বনে এদের দেখা পাওয়া যায়। সাপটি সাধারণত মানুষের ক্ষতি করে না। খাদ্য হিসেবে এরা ইঁদুর, কচ্ছপের ডিম, সাপ, বন মুরগি, পাখি, ছোট বন্যপ্রাণী ইত্যাদি খায়। সাপটি নিজের আকারের চেয়েও অনেক বড় প্রাণী খুব সহজেই গিলে খেতে পারে।
জোহরা মিলা বলেন, চামড়ার জন্য সাপটি পাচারকারীদের লক্ষবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ফলে আমাদের বনাঞ্চল থেকে এটি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসিল-২ অনুযায়ী এ বন্যপ্রাণীটি সংরক্ষিত, তাই এটি হত্যা বা এর যে কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।