আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কৃষি খাতে বরাদ্দ কমানোয় উদ্বেগ জানিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি। পাশাপাশি বাজেটে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের কাছ থেকে বেশি কর আদায় করার কৌশলকে বৈষম্যমূলক বলছে প্রতিষ্ঠানটি।
সোমবার (২ জুন) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিমত তুলে ধরেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন ব্যয় কমানো হয়েছে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ। ১৫ খাতের মধ্যে ১৪ খাতেই ব্যয় কমানো হয়েছে। তবে এখানে উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় হলো শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি- এ তিনটিতে টাকার অংকে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। সেটা আমাদের একটু উদ্বেগজনক মনে হয়। কারণ, আমরা এসব খাতে বরাদ্দের কথা সবসময় বলে এসেছি। কৃষিখাতে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে বরাদ্দ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভৌত অবকাঠামো খাতে বরাদ্দ বরাবরের মতো উপরের দিকেই আছে।
কর আদায়ের কৌশলে বৈষম্য হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, করের স্ল্যাব পরিবর্তন হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের যারা তাদের করের প্রবৃদ্ধি বা কর দেওয়ার হারটা বেশি। উচ্চ আয়ের পর্যায়ে যারা রয়েছেন তাদের করের হার অনেক কম পড়বে। এখানে একটা বৈষম্য দেখা যাচ্ছে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, অঞ্চলভিত্তিক কর যে ৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, সেখানেও বৈষম্য করা হয়েছে। কারণ, ঢাকা বা অন্য জায়গাকে এক করে দেখা হয়েছে। সরকারি সেবা সবজায়গায় সবাই সমানভাবে পায় না। সেখানে পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে।
বাজেটের ভালো দিকগুলোর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, এটা ভালো পদক্ষেপ। ই-কমার্সকে ফরমাল সেক্টরে আনা হয়েছে। একে করের আওতায় আনা হয়েছে। বিনিয়োগের জন্য পিপিপির মাধ্যমে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকার ফান্ড করার কথা বলা হয়েছে। সেটা একটা ভালো পদক্ষেপ। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এক হাজার কোটি টাকার যে ফান্ড করা হয়েছে সেটাকেও আমরা স্বাগত জানাই।
ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, শুল্কের ক্ষেত্রে যৌক্তিকীকরণ করা হয়েছে। এটা করতে গিয়ে কিছু কিছু শিল্প চাপে পড়তে পারে। ব্যবসায়ের খরচ বেড়ে যাবে। শুল্কের যৌক্তিকীকরণ করতেই হবে। কারণ, বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশন হবে। তবে এর প্রতিঘাত মোকাবিলা করার জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি বা সরকারি সেবায় মনোযোগ দিতে হবে। শিল্পে খরচ কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
এসময় জিডিপির লক্ষ্য নিধারণ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ২০৩৫ সালে নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ। এটা আগামী অর্থবছরের জন্য ধরা হয়েছে ৯ শতাংশ। তাহলে ১০ বছরে মাত্র এক দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে কেন! এটা মধ্যমেয়াদি সমষ্টিক অর্থনীতির লক্ষ্য হিসেবে সমীচীন নয়। এছাড়া কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে করহার বাড়ানো হয়েছে। এ সুযোগ রাখা ভালো করদাতাদের জন্য নৈতিক আঘাত।
এসএম/কেএসআর/এমএস

 4 months ago
                        12
                        4 months ago
                        12
                    








 English (US)  ·
                        English (US)  ·