শিশুদের হাঁপানি সম্পর্কে যা যা জানা জরুরি

2 weeks ago 14
হাঁপানি হলো শ্বাসনালির প্রদাহজনিত একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, ঘন ঘন কাশি হয় এবং বুকে টান লাগে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (CDC)-এর মতে, প্রায় ৬০ লাখ শিশু এই রোগে ভুগছে। বাংলাদেশেও হাঁপানি শিশুদের মধ্যে একটি সাধারণ সমস্যা। আপনার সন্তান যদি হাঁপানিতে ভোগে, তবে এর কারণগুলো জানা এবং দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আরও পড়ুন : শিশুদের মূত্রনালির সংক্রমণ সম্পর্কে সচেতন হোন এই লেখায় শিশুদের হাঁপানির উপসর্গ, কারণ, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধের পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। হাঁপানির উপসর্গ শিশুদের হাঁপানির উপসর্গ সাধারণ ঠান্ডা বা বুকে কফ জমার মতো রোগের সঙ্গে মিল থাকতে পারে। তবে হাঁপানির উপসর্গগুলো অনেক সময় দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং শিশুর দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে। সাধারণ উপসর্গগুলো হলো : - ঘন ঘন কাশি (বিশেষ করে রাতে বা ঠান্ডা লাগলে) - শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া (হাঁপ ধরা) - শ্বাস নেওয়ার সময় শিসের মতো শব্দ হওয়া - সাধারণ খেলাধুলার সময়েও দম বন্ধ হয়ে আসা ছোট শিশুদের (টডলারদের) ক্ষেত্রে এই বয়সের শিশুরা তাদের কষ্ট বোঝাতে পারে না, তাই বাবা-মায়ের সতর্ক থাকা জরুরি। উপসর্গগুলো হতে পারে: - রাতে ঘুমে ব্যাঘাত - খেলার সময় সহজেই ক্লান্ত হওয়া - বারবার ঠান্ডা বা সর্দি-কাশি থেকে সুস্থ হতে দেরি হওয়া - স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দুর্বলতা বড় শিশুদের ক্ষেত্রে তারা সাধারণত নিজেই তাদের অস্বস্তির কথা বলতে পারে। এই বয়সে উপসর্গগুলো হলো: - সারাদিনে শক্তি কম থাকা - বুকে চেপে বসা বা ব্যথা অনুভব - রাতে নিয়মিত কাশি মনে রাখবেন, উপসর্গের ধরন ও মাত্রা শিশুভেদে ভিন্ন হতে পারে। কারও হালকা উপসর্গ থাকতে পারে, আবার কারও অবস্থার অবনতি হলে হাঁপানির অ্যাটাকও হতে পারে। হাঁপানির অ্যাটাকের লক্ষণ যখন হাঁপানির উপসর্গ হঠাৎ বেড়ে যায়, তখন তাকে হাঁপানির অ্যাটাক বলা হয়। গুরুতর অ্যাটাকের সময় দেখা যেতে পারে: - তীব্র শ্বাসকষ্ট - ঠোঁট বা নখ নীলচে হয়ে যাওয়া - রক্তচাপ কমে যাওয়া - হার্টবিট খুব কম বা খুব বেশি হওয়া - ঘাবড়ে যাওয়া বা বোকা বোকা ভাব এ অবস্থায় দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। হাঁপানির কারণ শিশুদের হাঁপানির পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে— বংশগত প্রভাব : পরিবারের কারও হাঁপানি বা অ্যালার্জি থাকলে শিশুর হাঁপানির ঝুঁকি বাড়ে। অ্যালার্জি : ধুলাবালি, পশুর লোম, ফুলের রেণু ইত্যাদির কারণে হাঁপানি হতে পারে। শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ : ছোট বেলায় বারবার ঠান্ডা লাগা বা ফুসফুসে ইনফেকশন হলে হাঁপানি হতে পারে। হাঁপানির ট্রিগার (উদ্দীপক কারণ) শিশুদের হাঁপানির কিছু সাধারণ ট্রিগার রয়েছে, যেগুলো এড়ানো গেলে উপসর্গ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়: - সর্দি, কাশি বা ফ্লু - ব্যায়াম বা দৌড়ঝাঁপ (বিশেষ করে ঠান্ডা বা ধোঁয়াটে পরিবেশে) - ধোঁয়া, ধুলাবালি বা বায়ুদূষণ - অ্যালার্জেন (যেমন ধুলা, পশুর লোম, ছাঁচ) আপনার শিশুর কোন জিনিসে সমস্যা হয় তা জানলে, তার দৈনন্দিন জীবন সহজ করতে পারবেন। যেমন: - পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা শিখিয়ে ভাইরাস থেকে দূরে রাখা - ব্যায়ামে হাঁপানি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ ব্যবহার করে খেলাধুলা চালিয়ে রাখা   - ঘর ধুলাবালি ও অ্যালার্জেন মুক্ত রাখা কখন ডাক্তার দেখাবেন? আপনার শিশুর মধ্যে হাঁপানির উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যান। যত বেশি দেরি করবেন, তত বেশি ঝুঁকি বাড়বে। সঠিক সময় ধরা পড়লে হাঁপানির চিকিৎসা শুরু করা যাবে এবং আপনার সন্তানের জীবনযাত্রা সহজ ও স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হবে। আরও পড়ুন : শিশুদের ব্যক্তিত্বজনিত মানসিক সমস্যা, কেন সচেতন হওয়া জরুরি আপনার সন্তান যদি এ ধরনের সমস্যায় ভোগে, তবে দেরি না করে শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। সূত্র: হেলথলাইন
Read Entire Article