শীতের জেলা পঞ্চগড়ে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। একইসঙ্গে বেড়েছে ঘন কুয়াশা। গত ২-৩ দিন থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে গোটা এলাকা। এখানে অক্টোবরের শুরু থেকেই শীতের আমেজ শুরু হয়। তবে নভেম্বর থেকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ডিসেম্বর ও জানুয়ারি জুড়ে কনকনে শীত অনুভূত হয়। রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে চলতি শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন ১৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
উত্তরের এই জেলায় প্রতি বছর মৌসুমের কিছুটা আগেই শীত শুরু হয়। গত কয়েকদিন ধরেই রাতের ও দিনের তাপমাত্রা কমছে। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় কুয়াশা। রাতভর কুয়াশা ঝরে বৃষ্টির মতো। সকাল ৯টা পর্যন্ত কুয়াশা থাকে। এরপর সূর্যের আলোয় মিলিয়ে যায় ঘনকুয়াশা। তবে দিনে বেশ গরম অনুভূত হয়।
গত কয়েকদিন ধরে দিনে ২৯ থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। শুক্রবার রাতের তাপমাত্রা ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার বিকেলে জেলায় সর্বোচ্চ ২৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস।
উপজেলা সদরের হাফিজাবাদ এলাকার খয়রুল ইসলাম বলেন, দুই তিনদিন ধরে সন্ধ্যার পর থেকে কুয়াশা শুরু হয়। সকাল পর্যন্ত ঘনকুয়াশা থাকে। দিনে গরম লাগলেও রাতে শীতের কাপড় নিতে হয়।
এদিকে দিনে গরম এবং রাতে শীতের কারণে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমনিয়া ও ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষে স্থান সংকুলান না হওয়ায় মেঝে বা বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেক রোগী।
আগাম প্রস্তুতি হিসেবে স্থানীয় মানুষজন শীতের কাপড় বের করতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে রাতে পথচারী ও মোটরসাইকেল চালকদের শীতের কাপড় পরতে দেখা গেছে। জেলা শহরের লেপ তোষকের দোকানেও বেড়েছে কর্মব্যস্ততা।
পঞ্চগড় বাজারের লেপতোষক ব্যবসায়ী মো. বাপ্পী বলেন, এই সময়ে প্রতি বছর আমাদের কাজের চাপ বেড়ে যায়। এবারও কাজ বেড়েছে। তবে কাপড় এবং তুলার দাম বেশি হওয়ায় আগের মতো ভিড় নেই। অনেকে সাধ্যের মধ্যে লেপ বানানোর অর্ডার দিচ্ছেন।
শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মনোয়ার হোনের বলেন, যেকোনো ঋতু পরিবর্তনের সময় সাধারণত অনেকেই ভাইরাসজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হয়। শীতের শুরু থেকেই হাসপাতালে শিশু ও বৃদ্ধরা শীতজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন। সীমিত জনবল আর স্থান সংকুলান না হওয়া সত্ত্বেও আমরা যথাসাধ্য চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ বলেন, রোববার সকালে তেঁতুলিয়ায় চলতি শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন ১৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। চলতি সপ্তাহে দিন ও রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।
এফএ/এএসএম