হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ও মেশিনারি মেরামতের বিষয়টি সার্ভিস চুক্তিতে স্পষ্ট করে উল্লেখ থাকলে তাহলে এসব অকার্যকর হিসেবে পড়ে থাকবে না বলে জানিয়েছেন মেডিকেল টেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি লিডার ও মেডট্রনিকের প্রাক্তন চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) এবং চেয়ারম্যান ড. ওমর ইশরাক।
তিনি বলেন, যেসব প্রস্ততকারক বা কোম্পানি হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ও মেশিনারি সরবরাহ করে তাদের সঙ্গে এমন সার্ভিস চুক্তি হতে হবে, যাতে যন্ত্রপাতিতে কোনো সমস্যা হলে তারা নিজ উদ্যোগে ঠিক করে দেয়। সার্ভিস চুক্তিতে এটা উল্লেখ থাকলে প্রস্ততকারক বা সরবরাহ কোম্পানি নিজেরাই এটা মেরামত করবে। প্রয়োজনে তারা যন্ত্রপাতি নিয়ে ঠিক করবে অথবা আমাদের দেশেই যন্ত্রপাতি ঠিক করার জন্য তাদের অফিস স্থাপন করবে। সার্ভিস চুক্তিতে স্পষ্ট করে এসব বিষয় উল্লেখ থাকলে হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ও মেশিনারি নিয়ে সমস্যা হবে না।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর শাহবাগে বিএসএমএমইউ কনভেনশন হলে মেডিকেল ইকুইপমেন্ট ও ডিভাইস বিষয়ক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় সারাদেশের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সদর হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, বিশেষায়িত হাসপাতালের যন্ত্রপাতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়। একই সঙ্গে এসব যন্ত্রপাতি ঠিকমতো মেরামত, সংরক্ষণ, অকেজো যন্ত্রপাতি কার্যোপযোগী করার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ওমর এস. ইশরাক একজন বাংলাদেশি আমেরিকান ব্যবসায়িক নির্বাহী। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ইন্টেলের বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আগে ২০১১ সালের জুন থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মেডট্রনিকের বোর্ডের সিইও ও চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ওমর এস. ইশরাক বলেন, যদি আমরা রোগ হওয়ার আগে তা প্রতিরোধ করতে পারি তাহলে আমাদের হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়বে না। মাত্রাতিরিক্ত রোগী ভর্তি হওয়ার কারণে হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়াটা ব্যাহত হয়। আমাদের রোগ না হওয়ার জন্য প্রিভেনটিভ এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
সভায় তিনি আরও বলেন, আমরা যদি হাসপাতাল বানানোর কথা বলি, বর্তমানে জনসংখ্যা এবং রোগীর যে চাপ তা শুধু হাসপাতাল বানিয়ে সমাধান করা সম্ভব নয়। আমরা যদি রোগের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দেই, তাহলে গ্রাম থেকে শহরে ও ঢাকায় রোগীর চাপ বাড়বে না। এজন্য আমাদের সচেতনতা এবং রোগ প্রতিরোধের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, আমরা খালি ওষুধের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছি। আসলে এটা স্বাস্থ্য সেবা না। এটা চিকিৎসা ব্যবসা হয়ে গেছে। আমরা যদি সবাই মিলে রোগ প্রতিরোধে গুরুত্ব দিয়ে স্বাস্থ্য সেবার মধ্যে ফিরে যাই, তাহলে সামগ্রিকভাবে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি সম্ভব। আমরা রাতকানা রোগের কথা জানি। এক সময় বাচ্চাদের মাঝে এই রোগের অনেক প্রকোপ ছিল। ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খেলে যেমন সবুজ শাক-সবজি, হলুদ ফলমূল খেলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। বর্তমানে মানুষের সচেতনতার কারণে এই রোগের প্রকোপ অনেকটাই কমেছে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ডা. মো. সায়েদুর রহমান এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী। আরও উপস্থিত ছিলেন মেডট্রনিক ল্যাবসের প্রেসিডেন্ট রুচিকা সিনঘাল।
জেডএইচ/