শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে সালাহউদ্দিনের প্রতিক্রিয়া

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এ রায়কে মাইলফলক বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে সর্বক্ষেত্রে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে সর্বক্ষেত্রে এবং এর মধ্য দিয়েই আগামী দিনে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ হবে- এটাই হবে আগামীর বাংলাদেশ। তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই সেই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাব, বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করব, রাষ্ট্রে একটা ভারসাম্যমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থা এবং সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করব ইনশাআল্লাহ। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, এ দেশের প্রতিটি মানুষ ভবিষ্যতে যাতে ন্যায়বিচার পায় সেরকম রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা অবশ্যই অবিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যাব, আজ সেটা একটা

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে সালাহউদ্দিনের প্রতিক্রিয়া

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এ রায়কে মাইলফলক বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে সর্বক্ষেত্রে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে সর্বক্ষেত্রে এবং এর মধ্য দিয়েই আগামী দিনে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ হবে- এটাই হবে আগামীর বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই সেই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাব, বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করব, রাষ্ট্রে একটা ভারসাম্যমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থা এবং সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করব ইনশাআল্লাহ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, এ দেশের প্রতিটি মানুষ ভবিষ্যতে যাতে ন্যায়বিচার পায় সেরকম রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা অবশ্যই অবিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যাব, আজ সেটা একটা মাইল ফলক।

প্রসঙ্গত, মামলার শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষ বারবারই অভিযোগ করেছিল, শেখ হাসিনা ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী সব ধরনের অপরাধের মাস্টারমাইন্ড অর্থাৎ পরিকল্পনাকারী, হুকুমদাতা ও সুপিরিয়র কমান্ডার বা সর্বোচ্চ নির্দেশদাতা।

এই মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া বাকি দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

সাবেক আইজিপি মামুন এই মামলার একমাত্র গ্রেপ্তারকৃত আসামি। তিনি এই মামলায় অ্যাপ্রুভার বা রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এই ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এই ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়।

পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় প্রথম মামলা (মিসকেস বা বিবিধ মামলা) হয়।

গত বছরের ১৭ অক্টোবর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালের প্রথম বিচার কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিনই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। ওইসময় শেখ হাসিনাই মামলাটির একমাত্র আসামি ছিলেন।

পরে এ বছরের মার্চে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সাবেক আইজিপিকে এ মামলায় আসামি করতে প্রসিকিউশনের করা আবেদন মঞ্জুর করে ট্রাইব্যুনাল।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালকে বলেছিলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের সময় ২০০৯ সালের ৬ই জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত।

১০ জুলাই তিন আসামির বিরুদ্ধে পাঁচ অভিযোগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে যে ৫টি অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো হলো : উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া; হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের 'হত্যা করে নির্মূলের নির্দেশ' দেওয়া; রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাইদ হত্যার ঘটনায় প্ররোচনা, উসকানি, ষড়যন্ত্র, সহায়তা, সম্পৃক্ততার অভিযোগ; গত বছরের ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা ছয়জনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ; আশুলিয়ায় জীবিত একজনকেসহ মোট ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে।

এই মামলায় আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, আহত ব্যক্তি ও প্রতক্ষ্যদর্শী, আহতদের চিকিৎসা দানকারী চিকিৎসকসহ মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

এছাড়া শেখ হাসিনার কথোপকথনের অডিও, ভিডিও, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন, জব্দ করা গুলি ট্রাইব্যুনালে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।

সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গত ১২ অক্টোবর এ মামলার যুক্তি-তর্ক শুরু হয়। শেষ হয় ২৩শে অক্টোবর।

ওইদিন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার দাবি জানান চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow