কোনো ব্যক্তি ৪৮ মাইল (৭৭.২৩২ কিলোমিটার) রাস্তা অতিক্রম করে কোনো জায়গায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজের শহর থেকে বের হলে ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় তাকে মুসাফির বলা হয়। মুসাফির গণ্য হওয়ার জন্য সফর পরিমাণ দূরত্ব অতিক্রম করা জরুরি নয়। সফরের নিয়তে নিজের শহর থেকে বের হয়ে এক মাইল অতিক্রম করলেও সে মুসাফির গণ্য হবে।
ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী মুসাফির ইসলামি বিধিবিধান পালনের ক্ষেত্রে কিছু ছাড় পান। যেমন রমজান মাসে রোজা রাখা মুসাফিরের ওপর ফরজ নয়। মুসাফির ওই সময় রোজা ভেঙে পরবর্তীতে সেটা কাজা করতে পারে। প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজগুলো অর্থাৎ জোহর, আসর ও ইশার নামাজ মুসাফিরদের কসর বা সংক্ষীপ্ত করে পড়তে হয়।
জুমার দিন জুমার নামাজ আদায় করাও মুসাফিরের ওপর ফরজ নয়। মুসাফির সম্ভব হলে জুমা আদায় করবে, কিন্তু জুমা আদায়ের সুযোগ না পেলে জুমা ছেড়েও দিতে পারে।
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ ও পরকালের ওপর যাদের ইমান আছে, তাদের ওপর জুমা ফরজ। তবে অসুস্থ, মুসাফির, নারী, শিশু ও ক্রিতদাসদের ওপর জুমা ফরজ নয়। (বায়হাকি, দারাকুতনি)
সফরে থাকা অবস্থায় জুমা ছুটে গেলে মুসাফির ব্যক্তি একা জোহর পড়ে নেবেন। কয়েকজন মুসাফিরের জুমা ছুটে গেলেও কোনো শহরে অবস্থান করা অবস্থায় জোহরের জামাত করবেন না। কারণ যে এলাকায় জুমা হয়, সেখানে জোহরের জামাত করা মাকরুহে তাহরিমি। তাই মুসাফিরদের কোনো দল জুমা আদায় করতে অক্ষম হলে তারা ওই দিনের জোহর প্রত্যেকে আলাদাভাবে আদায় করবেন।
একইভাবে অন্য অক্ষম ব্যক্তিরা, যারা কোনো কারণে জুমার জামাতে শরিক হতে পারেননি, যাদের ওপর জুমা ফরজ নয়, তারা প্রত্যেকে জুমার দিন আলাদাভাবে জোহরের নামাজ আদায় করবেন; জামাত করবেন না।
জুমার দিন মুসাফির ব্যক্তি অন্যান্য দিনের মতোই জোহরের নামাজ কসর হিসেবে দুই রাকাত আদায় করবেন। জুমার নামাজ বা জুমার দিনের জোহরের নামাজ কাজা হয়ে গেলে পরবর্তীতে কাজা হিসেবে দুই রাকাত কসরই আদায় করবেন, চার রাকাত পড়বেন না।
ওএফএফ