রাজধানীর শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেফতার সাবেক সচিব ভূঁইয়া শফিকুল ইসলামকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. আখতার মোর্শেদ এ আবেদন করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলামের আদালতে আসামিকে আটক রাখার বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আবেদনে বলা হয়, আসামি ভূঁইয়া মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত মর্মে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। তার প্রত্যক্ষ পরামর্শ ও সহযোগিতায় ‘মঞ্চ ৭১’ নামে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। এছাড়া তিনি এ মামলার এজাহারনামীয় আরেক আসামি আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ অন্য আসামিদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে গোপন বৈঠক ও যোগাযোগ করেছেন মর্মেও তথ্য পাওয়া গেছে। মামলাটি তদন্তাধীন। আসামি জামিনে মুক্তি পেলে রাষ্ট্র তথা সরকারের বিরুদ্ধে ফের যড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে এবং মামলার তদন্তে বিঘ্ন ঘটাবে।
এমতাবস্থায় মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মামলার তদন্তকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং আসামির নাম-ঠিকানা যাচাই না হওয়া পর্যন্ত আসামি সফিকুল ইসলামকে জেলহাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন। তদন্তের স্বার্থে পরবর্তী সময়ে ব্যাপক ও নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামিকে রিমান্ডে পাওয়ার আবেদন করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলেও আবেদনে জানায় পুলিশ।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার আনন্দলোক ইকো রিসোর্ট থেকে সফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে মামলার বাদী দেখতে পান, বেশকিছু লোকজন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) অডিটরিয়ামে কিছু লোককে ঘেরাও করে ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট’ বলে স্লোগান দিচ্ছে এবং সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বক্তব্য দিচ্ছেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধের লক্ষ্যে গত ৫ আগস্ট ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে।
ওই সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল জাতির অর্জনকে মুছে ফেলার সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে বাংলাদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আত্মত্যাগের প্রস্তুতি নেওয়া। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ২৮ আগস্ট সকাল ১০টায় ডিআরইউতে একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে তারা।
অভিযোগে আরও বলা হয়, এ গোলটেবিল বৈঠকে গ্রেফতার আসামিরাসহ আরও ৭০-৮০ জন অংশগ্রহণ করেন। পরে পুলিশ আসামিদের হেফাজতে নেন। এ ঘটনায় শাহবাগ থানার এসআই আমিরুল ইসলাম ২৯ আগস্ট বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন।
ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম ২০১৩ সালে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ছিলেন। পরে ২০১৫ সালে তাকে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব করা হয়।
এমআইএন/এমকেআর/এমএস