সম্পর্ক স্থায়িত্বের রহস্য জানালেন সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী দম্পতি

12 hours ago 7

সম্প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে বিবাহিত দম্পতি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামির এক দম্পতি। তারা জানিয়েছেন সম্পর্ক স্থায়িত্বের রহস্য।

এই দম্পতি জানিয়েছেন, তাদের সম্পর্ক টিকে আছে শুধু ভালোবাসার কারণেই।

১০৭ বছর বয়সী এলেনর গিটেন্স বলেন, আমরা একে অপরকে ভালোবাসি। আর তার ১০৮ বছর বয়সী স্বামী লাইল গিটেন্স সহজ ভাষায় উত্তর দেন, আমি আমার স্ত্রীকে ভালোবাসি।

লনজিভিকোয়েস্ট (দীর্ঘায়ু মানুষদের নিয়ে গবেষণাকারী একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা) তাদের বিবাহের ১৯৪২ সালের সনদ, যুক্তরাষ্ট্রের জনশুমারি রেকর্ড এবং বিভিন্ন আর্কাইভ যাচাই করে নিশ্চিত করেছে যে এলেনর ও লাইল গিটেন্স বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে একসঙ্গে থাকা দম্পতি।

৪ নভেম্বর প্রকাশিত লনজিভিকোয়েস্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্টোবর মাসে ব্রাজিলের মানুয়েল অ্যাঞ্জেলিম ডিনো (১০৬) এবং তার স্ত্রী মারিয়া ডি সুজা ডিনো (১০২)-এর মৃত্যুর পর গিটেন্স দম্পতি এই খেতাব অর্জন করেন।

তাদের বয়স মিলিয়ে দাঁড়িয়েছে ২১৬ বছরেরও বেশি, যা তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে প্রবীণ দম্পতিও বানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধ ও নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও তাদের ভালোবাসা টিকে আছে, যা সত্যিই অনন্য।

লাইল ও এলেনরের প্রথম দেখা হয় ১৯৪১ সালে, এক কলেজ বাস্কেটবল ম্যাচে — লাইল তখন ক্লার্ক আটলান্টা ইউনিভার্সিটির খেলোয়াড়, আর এলেনর ছিলেন দর্শক। কে জিতেছিল তা তিনি আজ আর মনে করতে পারেন না, শুধু মনে আছে, ওটাই ছিল লাইলকে প্রথম দেখা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লাইল সেনাবাহিনীতে যোগ দেবেন তা জেনেও তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৪২ সালের ৪ জুন লাইল তিন দিনের ছুটি পেয়ে জর্জিয়া থেকে ট্রেনে করে বিয়েতে আসেন

যুদ্ধের সময় লাইল ইতালিতে মার্কিন সেনাবাহিনীর হয়ে লড়াই করেন, আর এলেনর তখন গর্ভবতী অবস্থায় নিউইয়র্কে চলে যান। তিনি সেখানে এক এয়ারক্রাফট পার্টস কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন। দম্পতি চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতেন।

যুদ্ধ শেষে তারা নিউইয়র্কে স্থায়ী হন। দুজনেই সরকারি চাকরিতে যোগ দেন, ভ্রমণ করেন এবং সমাজসেবায় যুক্ত থাকেন। এলেনর ৬৯ বছর বয়সে ফোর্ডহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তারা মায়ামিতে চলে যান মেয়ের কাছে থাকতে।

এখন লাইল ও এলেনর মায়ামিতে থাকেন। লাইল বলেন, আমি খুশি যে আমি এখনও এখানে আছি। আমরা একসঙ্গে অনেক কিছু করেছি, একসঙ্গে সময় কাটাতে ভালো লাগে।

দীর্ঘ ৮৩ বছরের দাম্পত্যজীবনের এই গল্প প্রমাণ করে, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার আসল রহস্য কোনো জটিল সূত্র নয়—বরং নিখাদ ভালোবাসা।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

এমএসএম

Read Entire Article