সাংবাদিককে ফাঁসানোর চেষ্টা: ঘটনা তদন্তে মাদক অধিদপ্তরের টিম

6 hours ago 8

কক্সবাজারে মাদকের এডি কর্তৃক সাংবাদিককে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অপচেষ্টার অভিযোগ তদন্ত করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পাঠানো তদন্ত টিম। সংগঠিত ঘটনায় জাগো নিউজসহ নানা গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশের জেরেই অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাহিদ হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে চার জনের টিম মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তদন্ত কার্যক্রম চালায়।

জাহিদ হোসেন মোল্লা বলেন, মহাপরিচালকের (ডিজি) নির্দেশনায় আমরা চারজনের টিম সকালে কক্সবাজার পৌঁছাই। দুপুর থেকে অভিযুক্ত এডি, টিমের অন্য সদস্য, ভিকটিম সাংবাদিক শাহীন মাহমুদ রাসেলসহ অন্যদের জবানবন্দি নেওয়া হয়। তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বক্তব্য লিখিত নেওয়া হয়েছে। সংগ্রহ করা হয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট ভিডিও এবং অন্যান্য প্রমাণাদি। সবকিছু এক জায়গায় করে গোছানো একটি প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন মহলের কাছে সন্ধ্যার পরই পাঠানো হয়েছে।

সাংবাদিক শাহীন রাসেল বলেন, আমাকে মাদকের তদন্ত টিম ডেকে পাঠিয়েছিলেন। আমি জেলা কার্যালয়ে গিয়ে আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিবরণ লিখিত দিয়েছি।

সোমবার (৯ মার্চ) সকালে কক্সবাজার সদরের ঝিলংজার বাংলাবাজার এলাকার এক সিএনজি চালককে লিংকরোড থেকে ধরে নিয়ে যায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টিম। চালকের স্ত্রীর অনুরোধে মাদক টিমকে ফোন করে তাকে আটকের বিষয়ে জানতে চান বিডি২৪লাইভ ও সময়ের কণ্ঠস্বরের কক্সবাজার প্রতিনিধি এবং স্থানীয় দৈনিক মেহেদীর বিশেষ প্রতিবেদক শাহীন মাহমুদ রাসেল। সাংবাদিক ফোন করায় সিএনজি চালককে ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়া হয়। সন্ধ্যার পর এ বিষয়ে আবারো ফোন করা হলে মাদকের কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (এডি) এ কে এম দিদারুল আলম সাংবাদিক শাহীন রাসেলের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। এর জের ধরে দু’ঘণ্টার মাথায় পেটে ইয়াবাসহ আটক অন্য যুবকের মাধ্যমে সাংবাদিক রাসেলকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়।

বিষয়টি ফেসবুকে দেখে জেলায় কর্মরত একদল পেশাদার সাংবাদিক রাতেই মাদক কার্যালয়ে যান। তারা এডি দিদারের রুমে গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে, আটক তরুণকে সাংবাদিকদের সামনে আনা হয়। তখন আটক যুবক সাংবাদিক শাহীন মাহমুদ রাসেলের পুরো নাম কিংবা তার বাড়ি ও পরিচয় ঠিকমতো দিতে পারেননি। সাংবাদিক শাহীনের সঙ্গে তার কখনো কথাও হয়নি বলে স্বীকার করেন যুবক। তাহলে লাইভে সাংবাদিক শাহীনের ইয়াবার বাহক কেন বলা হয়েছে, এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি ওই যুবক।

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত এডি এ কে এম দিদারুল আলমও সদুত্তর দিতে পারেননি। কিন্তু ওই যুবকের নামে করা মাদকের মামলার এজাহারে শাহীন মাহমুদ রাসেলের সঠিক পরিচয় উল্লেখ করে ফেসবুক টিভিতে বলা কথাই লেখা হয়।

এ ঘটনায় ১০ মার্চ দুপুরে কর্মরত সাংবাদিকরা এডির বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন। তাকে ৭২ ঘণ্টার ভেতর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করার দাবি জানান তারা। পুরো বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে তদন্ত করতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালকের নেতৃত্বে চারজন কর্মকর্তাকে পাঠান।

সায়ীদ আলমগীর/এফএ/জেআইএম

Read Entire Article