মোশারেফ হোসেন সিকদার (নোমান মোশারেফ) ও কেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী শাকিলসহ কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ)।
বুধবার (২৭ আগস্ট) ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
একই সঙ্গে এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে।
মামলার নথিতে বলা হয়, আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে মোশারেফ হোসেন সিকদার ও নিউ নেশনের সহকর্মী মো. শিমুল হাসান একসঙ্গে মোটরসাইকেলে ডিআরইউয়ে যাওয়ার প্রাক্কালে রাস্তা পারাপারের সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-চ ১৫-৪১৮৭) তাদের গতিরোধ করে। একপর্যায়ে মোশারেফ হোসেন সিকদার মোটরসাইকেলের ব্যালান্স ঠিক রাখতে না পেরে নেমে যান। এমন সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই ড্রাইভারের সিটে বসা এক ব্যক্তি লাঠি বের করে তাকে আঘাত করেন। মাথায় হেলমেট থাকায় শরীরে আঘাত লাগে। এসময় তিনি লাঠির আঘাত প্রতিহত করতে গেলে লাঠির এক প্রান্তের খোঁচায় ড্রাইভারের ভ্রুতে সামান্য আঘাত লাগে।
এ সময় শিমুল হাসান ড্রাইভারকে প্রতিহত করতে গেলে তাকে গাড়ির ভেতর থেকে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। একই সময় এই গাড়ির ভেতরে বসা কয়েকজন গাড়ির ভেতর থেকে নেমে এসে আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে তাদের দুজনের ওপর চড়াও হন। তারা এলোপাথাড়ি লাথি, কিল এবং ঘুষি দিতে থাকেন। তারা একপ্রকার মব সৃষ্টি করে ফেলেন। তাদেরই একজন এ সময় পাশেই প্রেস ক্লাবের পুলিশ বক্সে গিয়ে পুলিশ নিয়ে এসে পুলিশ দিয়ে তাদের বেধড়ক পেটায়। আশপাশে যেসব সাংবাদিক ছিলেন তারা এই ঘটনার ভিডিও করতে গেলে পুলিশ তাদেরকেও পেটায়।
এ সময় আশপাশের সহকর্মীরা জড়ো হলে পুলিশ দ্রুত মোশারেফ হোসেন সিকদার এবং শিমুল হাসানকে পুলিশ বক্সে টেনে-হেঁচড়ে নিয়ে যায়। পুলিশ বক্সে নেওয়ার প্রতিবাদ করতে গেলে দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার সাংবাদিক সপ্তমি মন্ডল রিতু এবং দৈনিক খোলা বাজার পত্রিকার সাংবাদিক রোজিনা বেগম পুলিশি হেনস্তার শিকার হন।
পুলিশ বক্সে নিয়ে তাদের দুজনকে এলোপাথাড়ি বেধড়ক পেটানোর সময় বাংলাভিশন টেলিভিশনের রিপোর্টার কেফায়েত শাকিল পুলিশ বক্সের মধ্যে গিয়ে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশ নির্যাতনের ভিডিও করতে গেলে তাকেও হেনস্তার শিকার হতে হয়। তাকেও পুলিশ আঘাত করে। পরে বাংলা ভিশন ক্যামেরা রেকর্ডিং শুরু করলে পুলিশ মোশারেফ হোসেন এবং শিমুলকে বক্সের ভেতর থেকে বের করে দেয়। পরে সাংবাদিক কামরুজ্জামান বাবলু, গাযী আনোয়ার, শাহীন হাসনাত, ইয়াসির ওয়ার্দার তন্ময়সহ কয়েক আহত সাংবাদিকদের নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করেন।
ডিআরইউ নেতারা বলেন, মোশারেফ হোসেন সিকদার (নোমান মোশারেফ) ও কেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী শাকিলের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনা ন্যাক্কারজনক। অবিলম্বে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
এনএইচ/ইএ