জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাধারণ কোর্টেও মামলা হয়েছে। সেই সব মামলা নিয়ে আমরা তেমন ইতিবাচক কোনো কথা শুনতে পারছি না।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ জবানবন্দি পেশ করেন। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, শহীদ পরিবারের সঙ্গে যখন কথা বলি তখন সাধারণ কোর্টে যে মামলাগুলো রয়েছে সেসব বিষয়ে তেমন ইতিবাচক কোন কথা শুনতে পারছি না। অনেকে জামিন নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। সরকারের এ বিষয়ে প্ল্যান কী? আমরা আসলে এ বিষয়ে জানতে পারছি না। ফলে সেই মামলাগুলো যেনো যথাযথ গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়, এটা আমাদের আবেদন থাকবে।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আমরা ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা করি। এত মানুষ শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ, পুলিশসহ যারা জড়িত তারা বিচারের আওতায় আসবে, তাদের শাস্তি হবে। এটা ন্যায়বিচারের একটা নিদর্শন হয়ে থাকবে শুধু বাংলাদেশের জন্যই নয়, সারা পৃথিবীর জন্য। যে বা যারা স্বৈরশাসন কায়েম করতে চায়, জনগণের ওপর আক্রমণ চালায়, জনগণকে হত্যা করে, তার পরিণতি আসলে কী হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজে আমরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি। মামলা আরও অনেকগুলো আছে। ট্রাইব্যুনালে অনেক মামলা রয়েছে। সাধারণ কোর্টেও অনেক মামলা রয়েছে। গুমের মামলা রয়েছে। ফলে এই বিচারকে সার্বিকভাবে দেখতে হবে।
- আরও পড়ুন
- জুলাই হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনা ও কামাল জড়িত নন, নির্দেশও দেননি
- ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলায় শিক্ষার্থীরা অপমানিত বোধ করেছিলেন
তিনি বলেন, একইভাবে পুলিশ, মিলিটারিসহ অন্যান্য বাহিনীর যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনায় জড়িত তাদের যেনো বিচারের আওতায় আনা হয়। কোনো বাহিনী থেকে যাতে কেউ পার পেয়ে না যায়, সেটা আমাদের কাছে স্পষ্ট থাকতে হবে। আমরা দেখেছি, গুমের ঘটনায় অনেক অভিযোগ এসেছে। আমি নিজে অভিযোগ দিয়েছি, ডিজিএফআইয়ের যেসব কর্মকর্তা আমাকে তুলে নিয়ে গেছে, আমাকে হেনস্তা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, রামপুরা-বাড্ডার ঘটনায় দেখেছেন, বিজিবির একজন আর্মি অফিসার, তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। ফলে ট্রাইব্যুনালের কাছে, সরকারের কাছে আমাদের আবেদন থাকবে, যে অপরাধী, তাকে যেন বিচারের আওতায় আনা হয়। সে কোন বাহিনীর, সেটা যাতে দেখা না হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, যারা এই জনগণের ওপর হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, গুম করেছে, নির্যাতন করেছে, এবং সরকারকে ফ্যাসিবাদী হতে সহায়তা করেছে, ক্ষমতায় থাকতে সহায়তা করেছে। তাদের সবাইকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে এবং বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
এফএইচ/এনএইচআর/জিকেএস