‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’-এর অর্থ ও ফজিলত

2 days ago 8

‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ আল্লাহর রাসুলের (সা.) প্রতি সংক্ষীপ্ত দরুদ বা দোয়া যা আমরা তার সম্মানিত নাম উচ্চারণ করলে বা শুনলে পড়ে থাকি। ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ অর্থ হলো, আল্লাহ তার ওপর শান্তি ও রহমত বর্ষণ করুন।

সাধারণ অবস্থায় আল্লাহর রাসুলের (সা.) কথা বললে বা শুনলে দরুদ পড়া ওয়াজিব। কোনো আলোচনায় বা লেখায় আল্লাহর রাসুলের (সা.) আলোচিত হলে বা লেখা হলে লেখক, পাঠক, শ্রোতার জন্য অন্তত একবার আল্লাহর রাসুলের (সা.) ওপর দরুদ পাঠ করা ওয়াজিব। একই বৈঠকে বা লেখায় একাধিকবার আল্লাহর রাসুলের (সা.) নাম আলোচিত হলে একবার দরুদ বলা ওয়াজিব, আর একাধিকবার দরুদ পড়া মুস্তাহাব।

আলী (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, সেই ব্যক্তি কৃপণ যার সামনে আমার আলোচনা করা হয় অথচ সে আমার ওপর দরুদ পড়ে না। (সুনানে তিরমিজি)

আল্লাহর রাসুলের (সা.) প্রতি দরুদ পড়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তাআলা কোরআনে তার রাসুলের জন্য সালাত ও সালাম পাঠের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ নবির প্রশংসা করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণ নবির জন্য দোয়া করে। হে মুমিনগণ, তোমরাও নবির ওপর দরুদ পাঠ কর এবং তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও। (সুরা আহজাব: ৫৬)

অনেকগুলো হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) তার জন্য বেশি বেশি দরুদ পড়তে উৎসাহ দিয়েছেন। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আমার জন্য একবার দরুদ পড়বে, আল্লাহ তায়ালা তার ওপর দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। (সহিহ মুসলিম)

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বার্ণিত আরেকটি হাদিসে এসেছে, আল্লাহর রাসুলের জন্য দরুদ পাঠকারী কেয়ামতের দিন তার কাছে থাকবে। রাসুল (সা.) বলেন, কেয়ামতের দিন লোকদের মধ্যে ওই ব্যক্তিই আমার অধিক নিকটতম হবে, যে ব্যক্তি আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করবে। (সুনানে তিরমিজি)

নামাজ ও কোরআন তিলাওয়াতের সময় দরুদ পড়তে হবে?

নবিজির (সা.) নাম পড়লে বা শুনলে দরুদ পাঠের বিধান বা নির্দেশনা সাধারণ অবস্থার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কেউ যদি নামাজ আদায়রত থাকে, তখন তার সামনে কেউ নবিজির (সা.) নাম উচ্চারণ করলেও তার জন্য দরুদ পড়া আবশ্যক নয়। অন্যান্য সব কথাবার্তার মতো নবিজির (সা.) নাম শুনে দরুদ পড়া থেকেও সে বিরত থাকবে।

নামাজের তিলাওয়াতে কোরআনের আয়াতে নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নাম এলে তিলাওয়াতের মাঝে দরুদ পড়ার নিয়ম নেই। নামাজের বাইরে কোরআন তিলাওয়াতেও নবিজির (সা.) নাম এলে দরুদ পড়ার নিয়ম নেই। এ রকম ক্ষেত্রে তিলাওয়াতের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে।

সংক্ষেপে ‘সা.’ লিখলে ওয়াজিব আদায় হয়?

আল্লাহর রাসুল (সা.) প্রসঙ্গে লেখার সময় তার নামের পাশে ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বা সংক্ষেপে ‘সা.’ বা ‘দ.’ ইত্যাদি লেখা যেতে পারে যা দিয়ে বোঝানো যায় যে এখানে দরুদ পড়তে হবে। পাঠ করার সময় পূর্ণ ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ পড়তে হবে যেমন আমরা ওপরে উল্লেখ করেছি।

ওএফএফ

Read Entire Article