সিরিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে ক্ষমতাচ্যুত সরকার আসাদপন্থিরা। এতে নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ১৪ সদস্য আহত নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ সদস্য।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী পরিচালিত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হতাহতরা সবাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মী। আর হামলাকারীরা দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের এবং তারা ক্ষমতাচ্যুত আসাদ সরকারপন্থি। মঙ্গলবার ভূমধ্যসাগরীয় বন্দর এলাকা টারতুসের কাছাকাছি এলাকায় এ হামলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী দামেস্কের কাছে অবস্থিত কুখ্যাত সাইদনায়া কারাগারের ভূমিকার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একজন সাবেক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করার সময় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়।
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুল রহমানের বরাতে আল ওয়াতান সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হামলাকারীরা আসাদ সরকারের অনুগত। নিহতরা নিরাপত্তা ও বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তিন হামলাকারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর এলাকাটিতে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জোরদার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুর দিকে সিরিয়ায় বাশার আল আসাদ সরকারের পতন হয়। বাবা হাফিজ আল বাশাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে তার শাসনকাল শুরু হয়। প্রথমে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তী সময়ে বাবার মতোই কর্তৃত্ববাদী শাসক হয়ে ওঠেন তিনি। বাশার আসাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিরোধীদের ওপর দমনপীড়নের। এর আগে ২০১১ সালে আরব বসন্ত ঘিরে বাশার আসাদের ক্ষমতার মসনদ নড়ে উঠেছিল।
কিন্তু সে যাত্রায় রাশিয়া ও ইরানের সমর্থনে ক্ষমতায় টিকে গিয়েছিলেন বাশার আসাদ। এবার অবশ্য শেষরক্ষা হয়নি। রাশিয়া ও ইরান আগেই তাদের সামরিক উপস্থিতি কমিয়ে ফেলে। এরপরই হায়াত তাহরির আল শামের নেতৃত্বে বিদ্রোহীদের গ্রুপ মাত্র ৩টি শহর দখল করে নেওয়ার পরই দেশ ছেড়ে পালাতে হয় বাশার আসাদকে। গোপনে প্লেনে চড়ে ছাড়তে হয় মাতৃভূমিও।