সিরিয়ায় আসাদের পতন : রাশিয়ার প্রতি চপেটাঘাত

2 weeks ago 14

সিরিয়ার দুই দশক ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে রক্ষা করতে রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। প্রায় এক দশক ধরে রাশিয়া আসাদ সরকারের শক্তি ধরে রাখতে সহায়তা করেছে। 

রোববার (৮ ডিসেম্বর) সিরিয়ায় ঘটে যাওয়া এক বিস্ময়কর ঘটনায় বাশার আল আসাদ বিদ্রোহীদের আক্রমণে পতিত হয়েছেন এবং রাশিয়ায় পালিয়ে গেছেন।

ক্রেমলিনের সূত্রে রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাসের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, মানবিক কারণে রাশিয়া বাশার আল আসাদ ও তার পরিবারকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে। সিরিয়ায় এই নাটকীয় পরিবর্তনের ফলে রাশিয়ার ‘সিরিয়া প্রকল্পের’ পরিণতি বড় প্রশ্নের মুখে পড়েছে। রাশিয়া এখন এই পরিস্থিতি সামাল দিতে অক্ষম।

এর আগে ২০১৫ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ গৃহযুদ্ধের কারণে প্রায় পতনের মুখে পড়েছিলেন, তখন রাশিয়া হাজারো সেনা পাঠিয়ে তাকে রক্ষা করে। সিরিয়ায় রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতি ছিল তাদের একটি বড় লক্ষ্য : বিশ্ব পরাশক্তি হিসেবে নিজেদের অবস্থান প্রতিষ্ঠিত করা। 

প্রসঙ্গত, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়া পশ্চিমা শক্তির আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করছে এবং সিরিয়ায় এই সামরিক অভিযানে তারা সফলতা অর্জন করেছিল বলে মনে হয়।

তবে এখন রাশিয়ার জন্য বড় প্রশ্ন হলো, সিরিয়ায় তাদের সামরিক ঘাঁটিগুলোর কী হবে? হামিমিম বিমানঘাঁটি এবং টারতুস নৌঘাঁটি ৪৯ বছরের জন্য সিরিয়ার কাছ থেকে ইজারা পেয়েছিল রাশিয়া, যা তাদের পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে সাহায্য করেছিল।

এখন, সিরিয়ার বিদ্রোহী নেতারা রুশ সামরিক ঘাঁটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব ঘাঁটিগুলোকে উচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। যদিও তারা দাবি করছে, বর্তমানে কোনো গুরুতর হুমকি নেই।

রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে বাশার আল আসাদকে মধ্যপ্রাচ্যের একনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে সহযোগিতা করে আসছে। এখন, বাশার আল আসাদ সরকারের পতন রাশিয়ার জন্য একটি বড় ধাক্কা। তবে, রাশিয়া এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে নতুন কৌশল খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর দুর্বলতা নিয়ে আলোচনা করা হয়, যেখানে আলেপ্পোতে সেনারা বিদ্রোহীদের সামনে নিজেদের অবস্থান ছেড়ে দিয়েছিল। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একথা বলেছে, তারা সিরিয়ায় সব পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেছে, কিন্তু এখন তাদের অগ্রাধিকার ইউক্রেনের যুদ্ধ।

সব মিলিয়ে, সিরিয়ার এই পরিস্থিতি রাশিয়ার মর্যাদায় এক বড় আঘাত এবং এটি তাদের বিশ্ব রাজনীতিতে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের দিকে ঠেলে দেবে।

সূত্র : বিবিসি

Read Entire Article