সিলেটে এবার পুকুরের মধ্যে ‘পাথরের খনি’

3 hours ago 3

সিলেটের এবার কচুরিপানা ও মাটিচাপা দিয়ে ঢাকা অবস্থায় ৪টি পুকুর থেকে প্রায় দুইলাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুপুর ১২টা থেকে ধোপাগুল ও লালবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ পাথরগুলো জব্দ করা হয়। এ যেন পুকুরের মধ্যে ‘পাথরের খনি’র সন্ধান পাওয়া গেল।

বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন সিলেট সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরকার মামুনুর রশীদ।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ধোপাগুল ও লালবাগ এলাকায় ৪টি পুকুরের মাটি ও কচুরিপানা দিয়ে পাথর রাখার সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক অভিযান চালায়  সিলেট জেলা প্রশাসন ও সদর উপজেলা প্রশাসন। এ সময় প্রায় দুই লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়। এ সময় ফেলুডার দিয়ে মাটি তুলে পাথর উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়। 

সিলেট সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরকার মামুনুর রশীদ ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিসেস্ট তানভীর হোসেনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ, আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা।

এ ব্যাপারে সিলেট সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরকার মামুনুর রশীদ কালবেলাকে বলেন, আমাদের কিছু লোক সড়কের আশপাশের গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ধোপাগুল আর লালবাগের মাঝখানে একজায়গায় দুটি পুকুর ও আরও ভিন্ন জায়গায় দুটি পুকুরে কচুরিপানা দিয়ে ঢাকা অবস্থায় পাথর পাওয়া যায়। পুকুরের জায়গা নিয়ে আদালতে মামলা থাকায় মালিকানা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। 

তিনি বলেন, আমরা শনাক্ত করে এসেছি, খুব তাড়াতাড়ি পাথর তোলার কাজ শুরু হবে। 

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর থেকেই সিলেটের অন্যান্য কোয়ারির মতো কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর ও ধলাই নদীতে প্রকাশ্যে পাথর লুট শুরু হয়। প্রতিদিন শত শত নৌকায় করে এসব পাথর পরিবহন করা হতো। একপর্যায়ে নদীর তীর খুঁড়ে বালুর নিচ থেকেও পাথর উত্তোলন করা হয়। লাগামহীন এ লুটপাটে দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্রটি ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়ে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতারা এই লুটপাটে জড়িত। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা ছড়িয়ে পড়লে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও প্রশাসন নড়ে ওঠে।

এর মধ্যে হাইকোর্টের নির্দেশনায় সাদাপাথর এলাকা থেকে লুট হওয়া পাথর সাত দিনের মধ্যে উদ্ধার করে যথাস্থানে প্রতিস্থাপনের আদেশ দেন।

এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) মহাপরিচালক মো. আনোয়ারুল হাবীব বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ১,৫০০-২,০০০ জনকে আসামি করে কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলায় কোটি কোটি টাকার পাথর লুটের অভিযোগ আনা হয়। 

ঘটনার পর থেকে বিশেষ টাস্কফোর্স অভিযান শুরু করে। বিভিন্ন স্থানে বালু ও মাটির নিচে লুকানো অবস্থায় পাথর উদ্ধার হচ্ছে।

Read Entire Article