সীমান্তে ‘ভূতের শব্দ’ বাজিয়ে ভয় দেখাচ্ছে থাইল্যান্ড

3 hours ago 4

সীমান্ত এলাকায় লাউডস্পিকারে ‘ভূতের শব্দ’ বাজিয়ে ভয় দেখাচ্ছে থাইল্যান্ড, এমন অভিযোগ করেছেন কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান সিনেট সভাপতি হুন সেন। দেশটির মানবাধিকার কমিশনও বলেছে, এটি একধরনের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ। যদিও প্রতিবেশী দেশ দুটি গত জুলাই মাসে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল।

৭৩ বছর বয়সী হুন সেন ফেসবুকের এক পোস্টে জানান, কম্বোডিয়ার মানবাধিকার কমিশন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্কের কাছে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ড সীমান্ত এলাকায় ‘তীব্র, উচ্চস্বরে বিভীষিকামূলক শব্দ’ সম্প্রচার করছে, যা মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন।

আরও পড়ুন>>
‘তাৎক্ষণিক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া
থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া ‘শান্তিচুক্তি’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন ট্রাম্প
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্ত সংঘর্ষের নেপথ্যে কী?

কমিশনের পাঠানো ১১ অক্টোবর তারিখের ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোর স্থানীয় প্রশাসন ও ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, থাই সেনারা রাতভর লাউডস্পিকারের মাধ্যমে ‘হাহাকার করা ভূতের মতো শব্দ ও বিমানের ইঞ্জিনের আওয়াজ’ বাজাচ্ছে।

কম্বোডীয় মানবাধিকার কমিশনের দাবি, এই ভয়াবহ শব্দ দীর্ঘ সময় ধরে সম্প্রচারিত হওয়ায় স্থানীয়দের ঘুম ও মানসিক স্বস্তি নষ্ট হচ্ছে, উদ্বেগ বাড়ছে এবং শারীরিক অস্বস্তিও দেখা দিচ্ছে। এতে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি থাই সরকার।

হুন সেনের ছেলে হুন মানেত বর্তমানে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী। হুন সেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরও জানান, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিষয়টি মালয়েশিয়ার সঙ্গেও তুলেছেন। মালয়েশিয়া দেশ দুটির মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছিল।

চলতি বছরের জুলাইয়ে মালয়েশিয়ায় আলোচনার পর থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া ‘তাৎক্ষণিক ও নিঃশর্ত’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, যা গত এক দশকের মধ্যে দুই দেশের সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষের অবসান ঘটায়।

এই সংঘর্ষে অন্তত ৩৮ জন নিহত এবং তিন লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই দেশের নেতার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং হুঁশিয়ারি দেন, যুদ্ধ থামানো না হলে বাণিজ্য আলোচনাও স্থগিত থাকবে। এরপরই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে।

এই মাসের শেষে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ট্রাম্পের উপস্থিতিতেই দুই দেশের মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে, থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে পাল্টা অভিযোগ উঠেছে, কম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন করে মাইন পুঁতেছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই থেকে এ পর্যন্ত মাইন বিস্ফোরণে অন্তত ছয় থাই সেনা আহত হয়েছেন।

তবে কম্বোডিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, থাই সেনারা আসলে দেশটির গৃহযুদ্ধের সময়কার পুরোনো বিস্ফোরকেই পা দিয়েছিলেন। গৃহযুদ্ধের পর কম্বোডিয়া বিশ্বের অন্যতম বেশি মাইন-বিক্ষিপ্ত দেশ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
কেএএ/

Read Entire Article