দেশের শেয়ারবাজারে ফের লেনদেন খরা প্রকট হয়ে উঠেছে। ধারাবাহিকভাবে কমে সোমবার (২০ অক্টোবর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। লেনদেন খরা দেখা দিলেও বাজারটিতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ফলে বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক।
ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকলেও অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এরপরও বাজারটিতেও মূল্যসূচক বেড়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে সূচকও ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। তবে প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর বাজারের চিত্র বদলে যায়। দাম কমার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ধরা অব্যাহত থাকে। ফলে সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৩০০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৩টির। আর ৪৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৬৭টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৩৫টির দাম কমেছে এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৭৬টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে একটির দাম কমেছে এবং ৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৫৭টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭টির এবং ২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৬টির দাম কমেছে এবং ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬৭ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১১১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিকে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৯৪ কোটি ৬৪ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৪২ কোটি ৪০ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৪৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ২৪ জুনের পর ডিএসইতে সব থেকে কম লেনদেন হলো।
এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৪ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকার। ১৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, মিডল্যান্ড ব্যাংক এবং প্রগতি ইন্স্যুরেন্স।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৪টির এবং ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
এমএএস/এমএএইচ/এএসএম