সম্প্রতি ‘ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-এর চার এজেন্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে আটক হয়েছে’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।
রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধান করে জানায়, ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ এর চার এজেন্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার দাবিটি সঠিক নয়।
তারা আরও জানায়, বরং ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে নেত্রকোনায় সেনাবাহিনীর হাতে ভারতীয় চিনিসহ চার চোরাকারবারি আটক হওয়ার ছবি ও ভুঁইফোড় ওয়েব পোর্টালে প্রকাশিত কথিত সংবাদেরমাধ্যমে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, পোস্টের ‘বিস্তারিত কমেন্টে’ উল্লেখিত সূত্র হিসেবে একটি লিংক দেওয়া হয়েছে। লিংকটিতে ক্লিক করলে প্রথমে একটি নির্দিষ্ট ইন্টারফেস দেখা যায়, যেখানে আলোচিত দাবির সঙ্গে সম্পর্কিত কথিত একটি প্রতিবেদন প্রদর্শিত হয়। প্রতিবেদনে কিছু বস্তার সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং হাতকড়া পরিহিত তিনজন ব্যক্তিকে দেখা যায়।
তবে প্রতিবেদনে আলোচিত বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। কিছুক্ষণের মধ্যেই লিংকটি রিডাইরেক্ট হয়ে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন বিজ্ঞাপনে নিয়ে যায়।
কথিত প্রতিবেদনের সঙ্গে যুক্ত ছবিটি রির্ভাস সার্চ করে একটি দৈনিকেরর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট প্রকাশিত ‘নেত্রকোনায় সেনাবাহিনীর হাতে ভারতীয় চিনিসহ ৪ চোরাকারবারি আটক’ শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে ব্যবহার করা ছবির সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবি একই।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, নেত্রকোনায় সেনাবাহিনী একটি টিম জেলার দুর্গাপুরের আত্রাইখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫৮ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ চারজন চিনি চোরাচালানকারীকে আটক করেছে।
নেত্রকোনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর জিসানুল হায়দার সাংবাদিকদের কাছে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর একটি টিম রবিবার গভীর রাতে জেলার দুর্গাপুর উপজেলা আত্রাইখালী বাগান এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫৮ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ চার চোরাকারবারিকে আটক করেছে।’
আরও বলা হয়, ‘আটক চিনির আনুমানিক মূল্য ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। চিনি চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তার জন্য আটক চার চোরাকারবারি নাম প্রকাশ করা হয়নি। সোমবার (২০২৪ সালের ১২ আগস্ট) দুপুরে ৫৮ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ আটক চারজন চোরাচালানকারীকে ৩১ বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
ফলে গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ এর চারজন এজেন্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন, এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
সুতরাং ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ এর চারজন এজেন্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।