স্ত্রীর সঙ্গে ভালো ব্যবহারকারী স্বামীকে নিয়ে হাদিসে যা বলা হয়েছে

2 hours ago 2

বিয়ে শুধু সামাজিক বন্ধন নয়, বরং এটি ইসলামের দৃষ্টিতে এক মহান ইবাদত। দাম্পত্য জীবন হলো শান্তি, ভালোবাসা ও পরস্পরের প্রতি দায়িত্ববোধের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এক অনন্য সম্পর্ক। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, স্বামী-স্ত্রী একে অপরের জন্য পোশাকস্বরূপ- যেমন পোশাক মানুষকে আবরিত করে, রক্ষা করে, সৌন্দর্য বাড়ায়; তেমনি স্বামী-স্ত্রীও একে অপরকে আবরিত করেন, সান্ত্বনা দেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। তাই দাম্পত্য জীবনে সুখ-শান্তি লাভ করতে হলে উভয় পক্ষ থেকেই দরকার ধৈর্য, সহমর্মিতা ও পরস্পরকে বোঝার মানসিকতা।

বিশেষ করে স্বামীর দায়িত্ব অনেক বেশি। স্ত্রীকে ভালোবাসা, সম্মান করা, তার চাহিদা পূরণের চেষ্টা করা, কষ্টের সময়ে পাশে দাঁড়ানো- এসবই একজন মুমিন স্বামীর বৈশিষ্ট্য। ইসলামে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যার চরিত্র যত ভালো, তার আচরণ স্ত্রীর প্রতি ততই কল্যাণকর। একজন স্বামী যদি স্ত্রীর সঙ্গে স্নেহ, সহানুভূতি ও ভালো ব্যবহার করে, তবে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে সুসংবাদ রেখেছেন। তাই স্ত্রীর সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার শুধু দাম্পত্য জীবনকে সুখী-শান্তিময় করে না, বরং এটি ঈমানের পূর্ণতারও অন্যতম নিদর্শন।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে ইমানে পরিপূর্ণ মুসলমান হচ্ছে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তি। আর যেসব লোক নিজেদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম, তারাই তোমাদের মধ্যে অতি উত্তম। (তিরমিজি : ১১৬২)

এ ছাড়া স্বামীর জন্য স্ত্রীর প্রতি সহমর্মিতা দেখিয়ে তার কাজে সহযোগিতা করাও নবীজির (সা.) সুন্নত।  কারণ রাসুল (সা.) বাইরের যাবতীয় দায়িত্ব সুচারুভাবে আঞ্জাম দেওয়ার পাশাপাশি ঘরের কাজে সহযোগিতা করতেন। নিজের অনেক কাজ নিজেই করতেন। উম্মুল মোমিনিন হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবীজি (সা.) নিজের কাপড় নিজে সেলাই করতেন, জুতা মেরামত এবং সাংসারিক যাবতীয় কাজ করতেন। (ফাতহুল বারি : ১৩/৭০, মুসনাদে আহমদ : ২৩৭৫৬)

একবার আয়েশা সিদ্দিকা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘আল্লাহর রসুল কি পরিবারের লোকদের ঘরোয়া কাজে সহযোগিতা করতেন?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, আল্লাহর রাসুল ঘরের লোকদের তাদের কাজে সহযোগিতা করতেন এবং নামাজের সময় হলে নামাজের জন্য যেতেন।’ (বোখারি : ৬৭৬)
 
বিখ্যাত সাহাবি উকবা ইবনে আমির (রা.) বলেন, আমি একবার আল্লাহর রাসুলের কাছে জানতে চাইলাম, ‘দুনিয়া ও আখেরাতে মুক্তির পথ কী?’ উত্তরে তিনি আমাকে তিনটি উপদেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে একটি ছিল ‘তুমি পরিবারের সঙ্গে তোমার অবস্থান দীর্ঘ করবে।’ (তিরমিজি : ২৪০৬)

উল্লেখ্য, স্ত্রীর জন্য স্বামীর কাছে নিজেকে ভালোভাবে উপস্থাপন করা জরুরি। একজন ভালো, নেককার ও সতী স্ত্রীকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে হাদিসে। রাসুল (সা.) বলেছেন, দুনিয়ার পুরোটাই সম্পদ। তবে দুনিয়ার সর্বোত্তম সম্পদ হলো সতী স্ত্রী। (মুসনাদে  আহমদ : ৬৫৬৭) 

অন্য হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, মহানবীকে (সা.) জিজ্ঞেস করা হয়েছে যে, কোন নারী উত্তম? উত্তরে তিনি (সা.) বলেন, যে নারীর প্রতি স্বামী নজর করলে সে স্বামীকে আনন্দ দান করে, স্বামীর কথামতো চলে, নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপারে স্বামীর বিরুদ্ধাচরণ করে না এবং স্বামীর মতের বিরুদ্ধে তার সম্পদ ব্যয় করে না।’ ি(সুনানে নাসায়ি : পৃষ্ঠা ১৪২)
 

Read Entire Article