ঘড়ির কাঁটায় দুপুর ২টা। সড়কে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠাচ্ছেন বাসের হেলপাররা। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রত্যেকটি সিট পূর্ণ না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সড়কে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকছে বাসগুলো।
সড়কে এলোপাতাড়ি দাঁড়িয়ে আছে অন্যান্য যানবাহনও। পাশেই দায়িত্ব পালন করছে ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু এগুলো দেখেও না দেখার ভান করছেন তারা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা।
রবি (২৫ মে) ও সোমবার (২৬ মে) ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ (বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু) মোড়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, শেরপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন রুটের যানবাহন চলাচল করে এই মোড় হয়ে। এখানে রয়েছে বাসটার্মিনাল। রয়েছে অনুমোদনহীন বিভিন্ন বাহনের স্ট্যান্ড। সারাবছর দিনের বিভিন্ন সময় কমবেশি যানজট লেগে থাকে এই মোড়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। তবে ভোগান্তি নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের কোনো ভূমিকা নেই।
পাটগুদাম এলাকার বাসিন্দা রিয়াজ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, সড়ক দখল করে যাত্রী ওঠালেও ট্রাফিক পুলিশ কিছুই বলে না। মনে হচ্ছে, গাড়ির চালক কিংবা মালিকদের কাছ থেকে ট্রাফিক পুলিশ অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছে।
ঢাকা-হালুয়াঘাট সড়কে চলাচল করে ইমাম পরিবহন। এই বাসে বসে থাকা যাত্রী হাফিজা খাতুন জাগো নিউজকে বলেন, আধাঘণ্টা আগে গাড়িতে উঠে বসে আছি। গাড়িতে একটি সিটও ফাঁকা নেই। তবুও বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠাচ্ছে।
ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব রোডে চলাচলকারী শ্যামল ছায়া পরিবহনের যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, বাসস্ট্যান্ড থেকে গাড়িতে উঠেছি। চালক ও হেলপার বলেছেন, এখনই গাড়ি ছাড়া হবে। কিন্তু আধাঘণ্টা বসে থাকলেও পাটগুদাম ব্রিজ মোড়টিও পাড় হয়নি বাস। মোড়ে গাড়ি থামিয়ে ঠাসাঠাসি অবস্থায় যাত্রী তোলা হচ্ছে।
শাহাদাৎ পরিবহনের বাসটিও ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কে চলাচল করে। কথা হয় বাসের চালক জহির মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার গাড়িতে কয়েকটি সিট ফাঁকা ছিল। তাই যাত্রী ওঠানোর জন্য সড়কে গাড়ি দাঁড় করানো হয়েছে। তবে ট্রাফিক পুলিশ আমাদের কাছ থেকে অনৈতিক কোনো সুবিধা নেয় না।
সড়কে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানোর সময় ট্রাফিক মোড়ে চেয়ে চেয়ে দেখছিলেন ময়মনসিংহ ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট মো. মোখলেছুর রহমান। সড়ক দখল করে যাত্রী ওঠানোর সুযোগ দেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, খেয়াল করিনি। ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আবু নাছের মো. জহির জাগো নিউজকে বলেন, দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া আছে। সড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। কোনো গাড়ির চালককে আলাদা সুবিধা দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, ট্রাফিক পুলিশের সামনে সড়ক দখল করে ইচ্ছামতো সময় গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠাতে দেওয়া যাবে না। কোনো ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে যানবাহনের চালকদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার প্রমাণ মিললে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কামরুজ্জামান মিন্টু/এসআর/এমএস