রাজনীতিমুক্ত পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে হলের রুমে ঢুকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কর্মীদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকাল ৩টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৫২৬ নম্বর রুমে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মীরা হলেন- সৈকত, শিহাব, ইমন, ওমর ফারুক ও জাকির। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক একরামুল হক লিমনের অনুসারী। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলেন মুরাদ হাসান। তিনি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মুরাদ হাসান জানান, অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী ওমর ফারুক আর তিনি ৫২৬ রুমে থাকেন। ওমর ফারুক মাঝেমধ্যেই তার সঙ্গে ঝামেলা করত। তিন দিন আগে রুমের দরজা খোলা নিয়ে মুরাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনা ওমর ফারুক তার বন্ধু শিহাবকে জানান। বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ওমর ফারুক মুরাদকে ঘুম থেকে তুলে নাক ডিাকার জন্য বকাঝকা করেন এবং তাদের মধ্যে কাটাকাটি হয়।
তিনি আরও জানান, জুমার নামাজ পড়ে শিহাব মুরাদকে হলের ছাদে ডেকে নিয়ে ওমর ফারুকের সঙ্গে ঝামেলা না করার জন্য হুঁশিয়ার করেন। হলের ছাদ থেকে মুরাদ রুমে গেলে ওমর ফারুক রুমে শিহাব, সৈকত, ইমন, জাকিরসহ কয়েকজনকে ঢেকে আনেন। এরপর তারা মুরাদকে কিল, ঘুষি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে রুমের ব্যাট নিয়ে মুরাদকে মারতে গেলে মুরাদের রুমমেটরা তাদের আটকে দেন। এরপর ছাত্রদলের ওই কর্মীরা রুম ত্যাগ করেন।
মুরাদকে মারধরের পর অন্য রুমের শিক্ষার্থীরা মুরাদের রুমে আসেন। এরপর তারা মুরাদকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য পাবনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
মুরাদকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মুরাদকে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়েছে। এর ফলে ওর বাম চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়। ডাক্তার ওকে দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ওমর ফারুকের কাছে বিষয়টি জানার জন্য মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
আরেক অভিযুক্ত শিক্ষার্থী শিহাব বলেন, আমি মারধরের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। আমি ওর ঝামেলা মেটাতে রুমে গিয়েছিলাম।
অভিযুক্ত আরেক শিক্ষার্থী ইমন বলেন, আমি ঘটনায় জড়িত ছিলাম না। আমি মারধরের সময় রুমে ছিলাম। শিহাব, সৈকত, ওমর ফারুকরা মারধর করেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক একরামুল হক লিমন বলেন, আমাদের দল থেকে কোথাও কোনো ঝামেলা করার নির্দেশনা নেই। কারো ব্যক্তির দায় সংগঠন নেবে না। প্রশাসন ওদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে ব্যবস্থা নিলে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম মিরু বলেন, আমি বাইরে ছিলাম। ঘটনাটি জানার পর হলে এসেছি। উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখব।