হাওর বাঁচাতে একনেকে ফিরিয়ে দেওয়া হলো ১২৬৮ কোটি টাকার প্রকল্প

8 hours ago 4

কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম উপজেলায় নির্মাণ করা হয়েছে ‘অল ওয়েদার রোড’। এর মাধ্যমে ৪৭ কিলোমিটার উঁচু পাকা সড়ক, ৩৫ কিলোমিটার সাবমার্সেবল সড়ক এবং সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলে হাওরের পরিবেশগত ক্ষতি হয়েছে। এদিকে, নতুন করে হাওরাঞ্চলের ক্ষতি এড়াতে এবার ১,২৬৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ফিরিয়ে দিয়েছে সরকার।

হাওরাঞ্চলের উন্নয়নে নতুন করে এক হাজার ২৬৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘জলবায়ু সহনশীল জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প (সিআরএএলইপি)’ নিয়েছিল স্থানীয় সরকার বিভাগ। এই প্রকল্পের বেশির ভাগ অর্থই ব্যয় করার পরিকল্পনা ছিল রাস্তা, বাজার ও ভবন নির্মাণে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়নি। হাওরের বুকে নতুন করে উন্নয়নের নামে যাতে কোপ মারা না হয় সেজন্য প্রকল্পটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ২৬৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে প্রায় ৩০৫ কোটি টাকা, আন্তর্জাতিক সংস্থা ইফাদ ঋণ দেবে ৮৫৪ কোটি এবং ডেনমার্কের উন্নয়ন সংস্থা ডানিডা অনুদান দেবে প্রায় ১১০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রকল্পটির মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর।

একনেক সভায় অংশ নেওয়া এক কর্মকর্তা বলেন, বিগত সময়ে স্বৈরাচার সরকার সড়কের নামে হাওরে অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। আমরা একই ক্ষতির পুনরাবৃত্তি হতে দিতে পারি না। হাওরে পরিবেশের ক্ষতি করে ইট-পাথরের প্রকল্প নেওয়া হবে না। যাতে হাওরের ক্ষতি না হয় সেই বিষয়গুলো চিন্তা করেই আমাদের উন্নয়ন করতে হবে।

একনেক সভা সূত্রে জানা গেছে, হাওর ও বরেন্দ্র অঞ্চলের মানুষের দারিদ্র্য হ্রাস, টেকসই জীবিকা ও জলবায়ু সহনশীলতা বাড়ানোই এর মূল লক্ষ্য। কিন্তু প্রস্তাবিত কার্যক্রমগুলোতে দেখা যায়, প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ অর্থই ব্যয় হবে অবকাঠামো নির্মাণে। প্রকল্পের আওতায় ৩৩৪ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক, ৫৮টি বাজার, ৭২টি কেল্লা বা আশ্রয়কেন্দ্র, ৩৪টি ঘাট, ৪৮০টি শৌচাগার ও ৭২০টি নলকূপ নির্মাণের পরিকল্পনা আছে।

হাওর এলাকায় অতিরিক্ত রাস্তা বা ভবন নির্মাণ দীর্ঘদিন ধরেই পরিবেশবিদদের উদ্বেগের কারণ। বন্যা মৌসুমে পানি ওঠা-নামার স্বাভাবিক ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হয়। এতে কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং মাছের প্রজননও ব্যাহত হয়। বিষয়গুলো নিয়ে একনেক সভায় আলোচনা করা হয়।

এমওএস/এমএমকে/এএসএম

Read Entire Article