হামলা-ভাঙচুরে লন্ডভন্ড ছায়ানট

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি নিজেও কবিতা লিখতেন, আবৃত্তি করতেন। নিজে গড়ে তুলেছিলেন ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার। অথচ গুলিবিদ্ধ হয়ে তার মৃত্যুর ক্ষোভকে পুঁজি করে তাণ্ডব চালানো হলো বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটে। বৃহস্পতিবার দিনগত মধ্যরাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট ভবনে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর চালায় একদল উত্তেজিত জনতা। হামলা আর ভাঙচুরে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানটি। চারপাশে এখন পড়ে আছে কেবলই ধ্বংসস্তূপ। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে ছায়ানট প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, পুরো ভবনজুড়ে ধ্বংসস্তূপের চিত্র। ভবনটি ঘিরে পাহাড়া দিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। এমন হামলা-ভাঙচুরের পর ছায়ানট কর্তৃপক্ষ বলছে, ছায়ানটে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ফলে যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। সরেজমিনে ছায়ানট ঘুরে দেখা যায়, ছায়ানটের সামনে অগ্নিসংযোগের চিহ্ন রয়ে গেছে। ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা গেছে, বিভিন্ন সরঞ্জাম ও বাদ্যযন্ত্র ভাঙচুর করে রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় তলায় অফিসকক্ষ, ক্যান্টিন ও অডিটোরিয়াম ভাঙচুর করা হয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ তলায়ও ভাঙচুর করা হয়েছে। বিভিন্ন কক্ষে ভাঙচুরের চিহ্ন চোখে পড়েছে। পঞ্চম তল

হামলা-ভাঙচুরে লন্ডভন্ড ছায়ানট

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি নিজেও কবিতা লিখতেন, আবৃত্তি করতেন। নিজে গড়ে তুলেছিলেন ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার। অথচ গুলিবিদ্ধ হয়ে তার মৃত্যুর ক্ষোভকে পুঁজি করে তাণ্ডব চালানো হলো বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটে।

বৃহস্পতিবার দিনগত মধ্যরাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট ভবনে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর চালায় একদল উত্তেজিত জনতা। হামলা আর ভাঙচুরে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানটি। চারপাশে এখন পড়ে আছে কেবলই ধ্বংসস্তূপ।

হামলা-ভাঙচুরে লণ্ডভণ্ড ছায়ানট

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে ছায়ানট প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, পুরো ভবনজুড়ে ধ্বংসস্তূপের চিত্র। ভবনটি ঘিরে পাহাড়া দিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা।

এমন হামলা-ভাঙচুরের পর ছায়ানট কর্তৃপক্ষ বলছে, ছায়ানটে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ফলে যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়।

হামলা-ভাঙচুরে লণ্ডভণ্ড ছায়ানট

সরেজমিনে ছায়ানট ঘুরে দেখা যায়, ছায়ানটের সামনে অগ্নিসংযোগের চিহ্ন রয়ে গেছে। ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা গেছে, বিভিন্ন সরঞ্জাম ও বাদ্যযন্ত্র ভাঙচুর করে রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় তলায় অফিসকক্ষ, ক্যান্টিন ও অডিটোরিয়াম ভাঙচুর করা হয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ তলায়ও ভাঙচুর করা হয়েছে। বিভিন্ন কক্ষে ভাঙচুরের চিহ্ন চোখে পড়েছে। পঞ্চম তলায় লাইব্রেরিতে আগুন দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী বই-দস্তাবেজ আগুনে পুড়ে গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা জাগো নিউজকে বলেন, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ছায়ানটে এমন হামলার ঘটনা আমাদের কাছে একেবারে বোধগম্য নয়।

হামলা-ভাঙচুরে লণ্ডভণ্ড ছায়ানট

আরও পড়ুন
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার ভবন ‘ধ্বংসস্তূপ’

তিনি বলেন, আমরা এ হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। একই সঙ্গে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। আমাদের কেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখন বলা যাচ্ছে না। যথেষ্ট ভাঙচুর হয়েছে। এটা (ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ) তদন্তের পর বলা যাবে। আর্থিক ক্ষতি কেমন হয়েছে তা বলা যাচ্ছে না। তবে, নথিগত দুষ্প্রাপ্য বিভিন্ন বই ও কাগজপত্র আগুন দিয়ে পুড়িয়ে নষ্ট করা হয়েছে।

‎ছায়ানটের সামনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ধানমন্ডি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খলিলুর রহমান বলেন, আমরা সকাল থেকে এখানে দায়িত্বে আছি। নতুন করে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অঘটন ঘটেনি।

হামলা-ভাঙচুরে লণ্ডভণ্ড ছায়ানট

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও হামলার খবরের মধ্যে একদল বিক্ষোভকারী বৃহস্পতিবার রাত ১টার পর ছায়ানট ভবনের সামনে জড়ো হন। রাত দেড়টার দিকে তারা ভবনটির নিচ তলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ফ্লোরের প্রতিটি কক্ষে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।

এসময় হামলাকারীরা ভবনে থাকা তবলা, হারমোনিয়াম, তানপুরা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র ভাঙচুর করে ও পুড়িয়ে দেয়। এসব বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে পুড়ে যাওয়া অনেক বই স্তূপ হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া মাটির তৈরি চারুকর্ম ও শিল্পকর্মগুলোও ভেঙে ফেলা হয়েছে।

একই রাতে বিক্ষোভকারীরা দেশের প্রথমসারির বাংলা দৈনিক প্রথম আলো ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে কার্যালয়ে ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এসময় প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেক সংবাদকর্মী অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

হামলা-ভাঙচুরে লণ্ডভণ্ড ছায়ানট

হামলাকারীদের থামাতে রাতে ডেইলি স্টার ভবনের সামনে গিয়ে একদল ব্যক্তির হাতে নাজেহাল হন নিউ এইজ সম্পাদক ও সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভাপতি নূরুল কবীর। এসময় তাকে ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ বলে স্লোগান দেওয়া হয়।

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত ১২ নভেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন ওসমান হাদি। দেশে চিকিৎসার পর গত সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে খবর আসে, সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।

কেআর/এমকেআর/এমএস

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow